লঞ্চের কেবিনে ‘পিকনিকে’ আসা নারীদের প্রকাশ্যে মারধর ও লুট, ভিডিও ভাইরাল

মুন্সিগঞ্জে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চে ‘পিকনিক করতে আসা’ অপ্রাপ্তবয়স্ক নারীদের প্রকাশ্যে মারধর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (৯ মে) রাতে মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাটে নোঙর করা ‘এমভি ক্যাপ্টেন’ নামক একটি লঞ্চে। ঢাকা-লালমোহন রুটের লঞ্চটি প্রায় ৩০০ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় ফিরছিল। এর দ্বিতীয় তলার কেবিনে অবস্থান করছিলেন ২০-২৫ জন কিশোর-যুবক এবং দুজন অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী।

 

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, এক কিশোরীকে লঞ্চের ডেকে ফেলে বেধড়ক পেটাচ্ছেন নেহাল আহমেদ জিহাদ নামের স্থানীয় এক যুবক। আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা ৫০-৬০ জন পুরুষ ঘটনাটি মোবাইলে ধারণ করেন এবং স্লোগান দিতে থাকেন।

 

‘আজকের পত্রিকা’কে দেওয়া বক্তব্যে জিহাদ দাবি করেন, "স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা করতে যাচ্ছিল, আমি একজন ভাই হিসেবে শাসন করেছি যাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ না হয়। এটা আমার উচিত হয়নি, তবে আমি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে দিয়েছি। আমি অনুতপ্ত।"

 

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, লঞ্চে থাকা ওই কিশোর-যুবকদের মাদকসেবী সন্দেহে স্থানীয় কিছু মানুষ উত্তেজিত হয়ে পড়ে। সন্ধ্যার খাবার আনতে ঘাটে নামা যাত্রীদের পিছু নিয়ে তারা লঞ্চে প্রবেশের চেষ্টা করে। লঞ্চ কর্তৃপক্ষ বাধা দিলে শুরু হয় হামলা। কেবিনে ঢুকে তারা দরজা ভাঙার চেষ্টা করে, যাত্রীদের মারধর করে এবং মোবাইল ফোনসহ টাকা লুট করে।

 

মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, “স্থানীয়দের উত্তেজনার কারণেই হামলা হয়েছে। আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।”

তবে এ ঘটনায় এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি বলে জানিয়েছেন মুক্তারপুর নৌ পুলিশ স্টেশনের ইনচার্জ মো. আতাউর রহমান। তিনি বলেন, “ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছিলেন। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

 

এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, প্রকাশ্যে এক কিশোরীকে লাঠিপেটার মতো ঘটনার পরও এখনো কেন কোনো গ্রেপ্তার বা দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি?

জাস্ট ইন