রংপুরে হতে পারে চার অর্থনৈতিক অঞ্চল
রংপুর বিভাগে দীর্ঘদিনের উন্নয়ন বৈষম্য ও শিল্পায়নের অভাব দূর করতে চারটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে ভূমি অধিগ্রহণ ও প্রশাসনিক জটিলতায় প্রকল্পগুলো এখনও বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি।
দিনাজপুরে ৩০৮ একরের মধ্যে মাত্র ৮৭ একর জমি অধিগ্রহণ হয়েছে। পঞ্চগড়ে ২৫০ একরের মধ্যে ১৮৭ একর এবং নীলফামারীতে ১০৬ একর জমি বেজার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কুড়িগ্রামে ১৪৯ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হলেও দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।
২০১৯ সালে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা পাড়ে ২৫৪.২৩ একর জমিতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার কাজ শুরু হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। ২০২৪ সালে কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের হয়বৎ খাঁ মৌজায় ২৫৪ একর খাস জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়, কিন্তু তা লালফিতায় আটকে যায়।
ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বিগত সরকারের বৈষম্যমূলক নীতির কারণে এই অঞ্চলে উন্নয়ন হয়নি। রংপুরের শ্রেষ্ঠ করদাতা ও ব্যবসায়ী নেতা তানবীর হোসেন আশরাফী বলেন, "গত ১৬ বছরে রংপুরে উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নয়ন হয়নি। বাজেটে রংপুরের প্রতি বৈষম্য ছিল চরম অবহেলার সামিল।"
রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি আকবর হোসেন জানান, অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন হলে এখানে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত হবে এবং নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, রংপুর অঞ্চলের ৭০ শতাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এখানে কৃষিভিত্তিক অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি সম্ভব। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক সাফুদ্দীন খালেদ বলেন, "উত্তরাঞ্চলের মানুষ কৃষি নির্ভর। এখানে ফরওয়ার্ড ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।"
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই অঞ্চলের উন্নয়ন বৈষম্য দূর করতে এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।