নওগাঁর ‘নাক ফজলি আম পেল জিআই স্বীকৃতি
নওগাঁর বিখ্যাত ‘নাক ফজলি আম’ এবার পেয়েছে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) সনদ। লম্বাটে গঠন, অতুলনীয় স্বাদ, মিষ্টতা ও সুগন্ধের জন্য পরিচিত এই আমটি প্রথম চাষ করা হয়েছিল জেলার বদলগাছী উপজেলায়। নিজ জেলার এই ঐতিহ্যবাহী আমের স্বীকৃতি পেয়ে আনন্দিত স্থানীয়রা।
বদলগাছী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাবাব ফারহান জানান, গত ১ মে বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ‘নাক ফজলি আম’ চাষি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোজাফ্ফর হোসেনের হাতে জিআই সনদ তুলে দেওয়া হয়। সনদটি প্রদান করেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, নাক ফজলি শুধু একটি আম নয়, এটি এ অঞ্চলের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও কৃষিনির্ভর অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর স্বাদ, পুষ্টিগুণ এবং বহুমুখী ব্যবহার দেশজুড়ে এর পরিচিতি এনে দিয়েছে।
এর আগে, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে বদলগাছীর নাক ফজলি আমের পক্ষে জিআই নিবন্ধনের জন্য পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়। পরবর্তীতে নওগাঁ জার্নাল নম্বর ৫৬ প্রকাশিত হলে, নিয়ম অনুযায়ী দুই মাসের মধ্যে কোনো বিরোধিতার নোটিশ না আসায় সনদ প্রদান করা হয়।
স্থানীয়দের মতে, বদলগাছীর ভান্ডারপুরের জমিদার বিনোদ কুমার লাহিড়ীর ছিল গাছপালা সংগ্রহের শখ। তীর্থভ্রমণের সময় তিনি ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আমের চারা এনে নিজের বাগানে রোপণ করতেন। এভাবেই তার বাগানে জায়গা করে নেয় কাশি ফজলি, বোম্বে ফজলি, দেবীভোগ, মালদা ফজলি ও নাক ফজলি আম। জানা যায়, ১৯২২ থেকে ১৯২৭ সালের মধ্যে লর্ড লিটনের সময়কালীন মুর্শিদাবাদের নবাবদের বাগান থেকে সংগ্রহ করা হয় নাক ফজলি আমের চারা, যা পরে নওগাঁয় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। আমটির নিচের দিকে নাকের মতো একটি অংশ থাকায় এর নাম ‘নাক ফজলি’ হতে পারে।
এএফএম