নীতিমালা অব্যাহত থাকলে মূল্যস্ফীতি ৪-৫ শতাংশে নামানো সম্ভব

সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা ও সরকারি প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে দেশে মূল্যস্ফীতি ৪ থেকে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নারী উদ্যোক্তাদের সমাবেশ, পণ্য প্রদর্শনী ও মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগ।

গভর্নর বলেন, "আমরা যদি একদিকে টাকা ছাপাই এবং অন্যদিকে বলি মূল্যস্ফীতি কমছে না, তাহলে তা সঠিক হবে না। আমাদের কঠোর অবস্থান বজায় রাখতে হবে। মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমছে, তবে সময় লাগছে। ক্রমান্বয়ে এটি আরও কমে আসবে।"

তিনি আরও উল্লেখ করেন, "এক সময় দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল প্রায় ১৪.৫ শতাংশ, যা এখন সাড়ে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। একইভাবে, খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ১২.৫ শতাংশ থেকে প্রায় ৯ শতাংশে কমেছে। আমরা বিশ্বাস করি, যথাযথ নীতিমালার মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি আরও কমানো সম্ভব।"

নারীদের অগ্রগতির বিষয়ে গভর্নর বলেন, "নারীদের সাংবিধানিক অধিকার এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি। ঋণ পেতে তাদের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। নারীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি আরও বাড়ানো প্রয়োজন।"

তিনি আরও বলেন, "আগে আমাদের মা-বোনদের অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়া হতো, যা এখন আর সময়োপযোগী নয়। নারীদের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে যুক্ত করতে মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন। বর্তমানে ব্যাংক খাতে মোট ঋণের মাত্র ৬ শতাংশ নারীদের কাছে পৌঁছায়, যা যথেষ্ট নয়।"

নারীদের ঋণ প্রদান প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, "ঋণ প্রদান শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফান্ড বাড়িয়ে নয়, বরং ব্যাংকগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকেও করতে হবে। নারীদের অধিকার বিবেচনায় উদ্যোগ নেওয়া জরুরি, পাশাপাশি তাদের আর্থিক সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।"

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার, নির্বাহী পরিচালক মো. খসরু পারভেজ, সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন এবং এসএমই ও স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগের পরিচালক নওশাদ মোস্তফা।

প্রসঙ্গত, সিএমএসএমই খাতে নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক চার দিনব্যাপী এই মেলার আয়োজন করেছে। মেলা চলবে ১১ মে পর্যন্ত, যেখানে বিভিন্ন জেলা থেকে ৬৮ জন নারী উদ্যোক্তা তাদের পণ্য নিয়ে অংশগ্রহণ করছেন। মেলার শেষ দিনে ছয়জন নারী উদ্যোক্তাকে সম্মাননা দেওয়া হবে।

জাস্ট ইন