সাহিত্য সংসদের মঞ্চ উচ্ছেদে সংস্কৃতিকর্মীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা

দেশের বিখ্যাত কবি-সাহিত্যিক এখানের মুক্তমঞ্চে সাহিত্যায়োজনে কবিতা পড়েছেন | ছবিঃ সংগৃহীত

ময়মনসিংহ নগরীর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন পার্কে জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের যৌথ অভিযানে সাহিত্য সংসদের দীর্ঘদিনের সাহিত্যচর্চার মুক্তমঞ্চ গুঁড়িয়ে দেওয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে সংস্কৃতিকর্মীদের মধ্যে। বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে পরিচালিত উচ্ছেদ অভিযানে এই ঘটনাটি ঘটে।

অভিযানে পার্কের ভেতরে অবৈধভাবে গড়ে উঠা বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করা হয়। এক পর্যায়ে সাহিত্য সংসদের মুক্তমঞ্চও ভেঙে ফেলা হয়। খবর পেয়ে সংস্কৃতিকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে প্রতিবাদ জানান, ফলে কিছু সময়ের জন্য উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রাখা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সাহিত্য সংসদের পক্ষ থেকে কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা। আগামী শুক্রবার অনুষ্ঠিতব্য ২১৪৬তম সাহিত্যচক্র ‘বীক্ষণ আসর’ বাতিল হওয়ায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় কবি-সাহিত্যিকরা।

সাহিত্য সংসদের সভাপতি কবি ফরিদ আহমেদ দুলাল জানান, ১৯৯৩ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংগঠনটিকে সাড়ে ৬ শতক জমি বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনও করা হয়। তিনি প্রশ্ন করেন, “আমরা তো মানুষের কল্যাণে সাহিত্যচর্চা করি, কোন অপরাধে আমাদের মঞ্চ ভাঙা হলো?”

কবি সাঈদ ইসলাম বলেন, “এই মঞ্চ শুধু শহরের নয়, সমগ্র অঞ্চলের সাহিত্যচর্চার প্রাণকেন্দ্র। এটি ভেঙে শিল্প-সংস্কৃতির উপর বুলডোজার চালানো হয়েছে।” তিনি প্রশাসনের কাছে মঞ্চ পুনর্নির্মাণের দাবি জানান।

জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমকে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। সিটি করপোরেশনের সচিব সুমনা আল মজিদ জানান, “সাহিত্য সংসদের কোনো বৈধ কাগজপত্র আমাদের কাছে নেই। চাইলে আমরা অন্য কোথাও তাদের জায়গা করে দেব। তবে অবৈধভাবে দখল করা স্থানকে মাদকসেবীদের আখড়া হিসেবে ব্যবহার হতে দেওয়া যায় না।”

এ ঘটনায় প্রতিবাদস্বরূপ বৃহস্পতিবার (১ মে) সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ‘প্রতিবাদী কথা, কবিতা ও গান’ শিরোনামে কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সংস্কৃতিকর্মীরা।