সকালের নাশতায় কী খাবেন?
সকালে ঘুম থেকে উঠার পর ধোঁয়া উঠা এক কাপ চা নিয়ে দিন শুরু করা অনেকেরই প্রথম পছন্দ। কেউ কেউ আবার ঘুম থেকে বিস্কুট বা রুটি কিংবা পরোটা দিয়ে নাশতা সেরে নেন। তারপর চায়ে চুমুক দেন। অধিকাংশ মানুষেরই এমন অভ্যাস।
সকালে নাশতা হিসেবে চা-বিস্কুট তো খাওয়া হয়, কিন্তু এসব স্বাস্থ্যকর কিনা, তা কি জানা আছে আমাদের? এসব ব্যাপারে পুষ্টিবিদরা কী বলে থাকেন, এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
চা-বিস্কুট কতটা উপকারী: অনেকেই মনে করেন, সকালে হালকা চা ও কয়েকটি বিস্কুট খেলেই নাশতা সম্পন্ন হয়ে যায়। কিন্তু পুষ্টিবিদরা বলে থাকেন, এই অভ্যাস দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টির ঘাটতি থেকে যায়।
চা, বিশেষ করে দুধ চা সকালে খালি পেটে খাওয়া হলে অ্যাসিডিটি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর প্যাকেটজাত বিস্কুটে চিনি ও ট্রান্স ফ্যাট বেশি থাকে। যা রক্তচাপ ও রক্তে চর্বির পরিমাণ বাড়িয়ে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত: পুষ্টিবিদ অনন্যা সেন জানিয়েছেন, চা-বিস্কুট মাঝে মধ্যে নাশতা হিসেবে খাওয়া যেতে পারে। তবে তা সকালের নাশতা বা রাতের খাবার হিসেবে নয়।
ঝাল মুড়ি: এটি সস্তা ও খুবই সাদামাটা খাবার হলেও মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। মুড়ি হালকা ও সহজ পাচ্য হওয়ায় অনেকের কাছেই প্রিয়। সকালে মুড়ির সঙ্গে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, সরিষার তেল ও অল্প লবণ দিয়ে খাওয়া ঠিক নয়।
পুষ্টি বিশ্লেষণ: মুড়িতে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকে এবং এতে ফ্যাট নেই বললেই চলে। একইসঙ্গে ভিটামিন ও প্রোটিনও প্রায় নেই। এমন খাবারে ঝাল, তেল ও লবণের পরিমাণ বেশি হলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।
ভালো দিক: ঝাল মুড়িতে কিছুটা কাঁচা সবজি (টমেটো, শসা) ও সেদ্ধ ডিম দেয়া হলে তা ব্যালান্সড ব্রেকফাস্ট হতে পারে।
পরোটা, সবজি বা ডিম কি ঠিক: সকালে গরম গরম পরোটা, আলুর চচ্চড়ি বা ডিমভাজি দিয়ে নাশতা করা অনেকেরই অভ্যাস। এ খাবার পুষ্টিকর মনে হতে পারে। কিন্তু তা নিয়ন্ত্রিত তেলে রান্না করতে হবে এবং তাতে প্রোটিন থাকতে হবে।
সুগার ও প্রেসার রোগীদের জন্য: কম তেল ও লবণে রান্না করা খাবার খাওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে পুষ্টিবিদের পরামর্শ হচ্ছে, সেদ্ধ ডিম বা ছোলা, ওটস, দই বা ফল, ছাতু বা ডালিয়া. হোল উইট ব্রেড বা হালকা রুটি এবং চিনি ছাড়া গ্রিন টি বা লেবু-পানি।
সকালের খাবার এমন হতে হবে, যা শরীরকে দিনভর শক্তি সরবরাহ করবে। শুধু চা-বিস্কুট বা মুড়ি দীর্ঘমেয়াদে খাওয়া হলে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি হতে থাকবে। এ জন্য এই অভ্যাস থাকলে তা পরিবর্তন করে সকালের নাশতায় পুষ্টিকর খাবার রাখার চেষ্টা করুন।