হার্ট ভালো রাখার ৪ উপকারী অভ্যাস
হার্ট সম্পর্কে বেশিরভাগ স্বাস্থ্য পরামর্শ একই রকম শোনায়- স্বাস্থ্যকর খাবার খান, ব্যায়াম করুন, চাপ এড়িয়ে চলুন। যদিও এর সবই জরুরি, তবে কিছু কম পরিচিত অভ্যাস আছে যা নীরবে হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে। এগুলো মৃদু পরিবর্তন। আপনি হয়তো বুঝতেও পারবেন না। কিন্তু সেসব অভ্যাসের ইতিবাচক প্রভাব পড়বে আপনার স্বাস্থ্য এবং হৃদযন্ত্রে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
বাইরে সময় কাটানো
প্রতিদিন বাইরে কিছুটা সময় কাটালে তা হৃদরোগের সম্ভাবনা অনেকটাই কমাতে পারে। কেন? এটি কেবল সূর্য বা তাজা বাতাসের কারণেই নয়, বরং এটি প্রকৃতির সূক্ষ্ম ছন্দ এবং ডিজিটাল দুনিয়া থেকে বিরতিও। ২০১৯ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১২০ মিনিট ব্যয় করলে তা সুস্বাস্থ্য এবং সুস্থতার বাড়াতে কাজ করে। খোলা আকাশের নিচে বসে থাকা, ঘাসের উপর হাঁটা বা গাছের কাছে বসে থাকা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং কর্টিসলের মতো স্ট্রেস হরমোন কমাতে সাহায্য করে।
স্বাভাবিকের চেয়ে এক ঘণ্টা আগে ঘুমানোর সময় পরিবর্তন করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। তা শুধুমাত্র বেশি ঘুমানোর জন্য নয়, বরং শরীরকে তার স্বাভাবিক সার্কাডিয়ান রিদম অনুসরণ করতে সাহায্য করার জন্য। রাত ১০টা থেকে ভোর ২টার মধ্যে গভীর, নিরবচ্ছিন্ন ঘুম হলো সেই সময় যখন শরীর তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মেরামতের কাজ করে, যার মধ্যে রয়েছে হৃদপিণ্ডের পেশী পুনরুদ্ধার এবং হরমোনের ভারসাম্য। প্রতি রাতে দেরি করে ঘুমাতে গেলে তা মেলাটোনিন ব্যাহত করে এবং রাতের রক্তচাপ বৃদ্ধি করে, যা উভয়ই হৃদরোগের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে ঘুমিয়েছেন তাদের হৃদরোগজনিত সমস্যার ঝুঁকি দেরিতে ঘুমাতে যাওয়া ব্যক্তিদের তুলনায় কম ছিল।
স্ক্রিন টাইম কমানো
অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম, বিশেষ করে ঘুমানোর আগে, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি করে। এটি ঘুমের মান খারাপ করে এবং মানসিক বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি করে। আপনার ডিভাইসগুলো পুরোপুরি বাদ দিতে হবে না, সেটি সম্ভবও নয়। তবে ঘুমের অন্তত ঘণ্টা দুই আগে থেকে সব ধরনের স্ক্রিন এড়িয়ে চললে অনেকটাই উপকার পাবেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতিদিন ৩০ মিনিট কম স্ক্রিন টাইমও হার্ট রেট ভ্যারিবিলিটি (HRV) উন্নত করে, যা হার্টের স্থিতিস্থাপকতার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলো অ্যাড্রেনালিনের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, যা হৃদযন্ত্রের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
মাটিতে খালি পায়ে দাঁড়ানো
মাটি, ঘাস বা বালিতে খালি পায়ে দাঁড়ানো একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস। এর প্রদাহ-বিরোধী প্রভাব রয়েছে। খালি পায়ে হাঁটলে তা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে পারে। জার্নাল অফ এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড পাবলিক হেলথ (২০১২) এর একটি ছোট গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত মাটিতে খালি পায়ে হাঁটলে তা হৃদরোগ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে।