বারো মাস ডালিম খেলে কী কী উপকার?
তাজা ফলের মতো পুষ্টিকর খাবার খুবই কম রয়েছে। ঋতু অনুযায়ী বাজারে রকমারি ফলের পসরা বসে। প্রায় সব ফলেরই কম-বেশি স্বাস্থ্য গুণাগুণ রয়েছে। তবে এর মধ্যে বারো মাসই পাওয়া যায় ডালিম ফল। লাল টকটকে দানাদার এই ডালিম ফল স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী।
ডালিমকে শুধু ফল হিসেবে চিনলেও এর পুষ্টিগুণের কথা আমাদের খুব কমই জানা। এরপরও বাজার থেকে ফল কেনার সময় প্রায়ই ডালিম কেনা হয়। এই ফল বারো মাস খাওয়ার ফলে কী কী উপকার মিলে, তা নিয়ে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন পুষ্টিবিদ অনুশ্রী মিত্র। এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
পুষ্টির ভাণ্ডার: ডালিমের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। ফাইবার, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের মতো পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় এই ফল থেকে। এ কারণে ডালিম নিয়মিত খাওয়া হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর: ডালিমকে বলা হয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পাওয়ার হাউজ। এই ফল বিভিন্নভাবে শরীরের যত্ন নেয়। এতে অ্যান্থোসায়ানিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস করে এবং ক্রনিক অসুখের ঝুঁকি প্রতিরোধ করে। আবার বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার ঝুঁকিও কমায়।
হার্টের জন্য উপকারী: ডালিমের রস খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাও হ্রাস পায়। উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযোগী: ডালিমের গ্লাইসেমিক সূচক কম। এ জন্য ডায়াবেটিসের রোগীরা ডালিম খেতে পারেন। রকমারি ভিটামিন ও মিনারেলে ভরপুর এটি। তাই ডালিম খাওয়া হলে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধির আশঙ্কা নেই।
হজমে সহায়তা: ডালিমে ডায়েটরি ফাইবার রয়েছে। যা পেটের সমস্যা দূরে রাখে। অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে সতর্কতার সঙ্গে খেতে হবে উপকারী এই ফল। অনেক সময় দেখা যায়, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে ডালিম খাওয়া হলে সমস্যা আরও বাড়ে। তবে পেটের জন্য উপকারী এই ফল।
ব্যথা কমায়: ডালিমে পলিফেনল নামক যৌগ রয়েছে, যা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি প্রদাহ রোধে সহায়তা করে। যাদের জয়েন্টে ব্যথা রয়েছে তারা ডালিমের রস খেতে পারেন। এতে অনেক ব্যথা কমে।
রক্তাল্পতার ঝুঁকি কমায়: ডালিম খেলে রক্তাল্পতার ঝুঁকি কমে। অনেকের ধারণা, এই ফলে আয়রন রয়েছে। মূলত এই ফলে ভিটামিন সি রয়েছে। আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। এতে আয়রন শোষণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এ কারণে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ে এবং রক্তাল্পতার ঝুঁকি হ্রাস করে।
কখন খেতে হবে: সকালের নাশতার পর এবং দুপুরে খাবার খাওয়ার আগে হালকা খাবার হিসেবে খেতে পারেন বেদানা। আবার দুপুরে খাবার খাওয়ার পর ও বিকেল চারটার দিকে খেতে পারেন ডালিম। এর দানা চিবিয়ে খাওয়ার মধ্যে উপকারিতা বেশি। চাইলে রস করেও খেতে পারেন। স্ন্যাকস ও ডেজার্ট হিসেবেও খেতে পারেন। আবার চাইলে টক দই, ওটস, স্মুদি, ফ্রুট সালাদের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন ডালিম।