জনগণের জন্য ত্যাগের রাজনীতি করে জামায়াত : ড. মাসুদ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জনগণের জন্য ত্যাগের রাজনীতি করে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি, বাউফল উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহাদাত বরণকারী বাউফল উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশেনের কর্মী শহীদ আশিকুর রহমান হৃদয়ের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করে পাঁচ দিনের মাথায় স্বৈরাচার হাসিনাকে পালাতে হয়েছে উল্লেখ করে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পতনের পর নতুন করে যারা এখন জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, তাদেরকে দমন করতে জনগণের পাঁচ দিন সময় লাগবে না।’
জামায়াতে ইসলামী জনগণকে শোষণের রাজনীতি করে না মন্তব্য করে ড. মাসুদ বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীকে তাদের এত ভয়ের কারণই হচ্ছে, জামায়াতে ইসলামী রাজপথে থাকলে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, লুটপাট আর ভারতীয় তাবেদারি করতে সমস্যা হবে। এ জন্য ভারতের পরামর্শে জামায়াতের বিরুদ্ধে এখন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। মিডিয়া খবর প্রকাশ হচ্ছে, ভারত তাদের শর্ত দিয়েছে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে হবে। তাহলে ভারত তাদেরকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। যারা জনগণের ভোটে বিশ্বাসী নয়, তারাই ভারতীয় বাবুদের হাতে-হাত রাখে। পেছনের দরজা দিয়ে কেউ আর এদেশে ক্ষমতার মসনদে বসতে পারবে না। জনগণ সেই পথ বন্ধ করে দিয়েছে। আবারো কেউ সেই পথ খুলতে চাইলে আওয়ামী লীগের মতই তাদেরকেও ভারতে পাঠিয়ে দেয়া হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘৫ আগস্টকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলতে যাদের কষ্ট হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থান না ঘটলে তারা রাজপথে দাঁড়িয়ে কথা বলার সুযোগ পেত না। স্বাধীনতা অস্বীকারকারীরাই স্বাধীনতাবিরোধী। জামায়াতে ইসলামী ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সকল আন্দোলন সংগ্রাম-সমর্থন করে এবং স্বীকার করে। অথচ আজকে একদল শুধু ১৯৭১-কে স্বীকার করছে। এরা ৫ আগস্টের আগে কথা বলারও সুযোগ পায়নি সেটি ভুলে গেছে। ছাত্র-জনতা জীবন ও রক্ত দিয়ে জাতিকে যেই দ্বিতীয় স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, এই স্বাধীনতাও ছিনতাই করতে অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাস বিকৃত করতে দেবে না। সে জন্য শহীদদের নিয়ে ১০ খণ্ডে আড়াই হাজার পৃষ্ঠায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের তথ্য সংরক্ষণ করেছে।’
ড. মাসুদ বলেন, ‘আমিরে জামায়াত ঘোষণা দিয়েছেন, আমরা শহীদদের দলীয় সম্পদে রূপ দেবো না। শহীদেরা জাতীয় সম্পদ। তাই দলমত নির্বিশিষে জামায়াতে ইসলামী জুলাই-গণঅভ্যুত্থানের সকল শহীদ পরিবারকে নগদ দুই লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব জামায়াতে ইসলামী পালন করেছে। যেটি করার কথা ছিল রাষ্ট্রের, সেটি রাষ্ট্র যথাযথভাবে এখনো পালন করতে পারেনি।’
বাউফল পশ্চিম জৌতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশেনের কর্মী শহীদ আশিকুর রহমান হৃদয়ের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান ও দোয়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পটুয়াখালী জেলা আমির মো: নাজমুল আহসান, বাউফল উপজেলা আমির মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক মিয়া, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন বাউফল উপজেলা সভাপতি মো: রেদোয়ান উল্লাহ, জামায়াতে ইসলামী বাউফল সদর ইউনিয়ন সভাপতি মাওলানা আব্দুস সুবাহান।
এছাড়াও উপজেলা জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের দায়িত্বশীল নেতারাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
পরে সন্ধ্যায় ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে বাউফল উপজেলা জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্র ঘোষিত দাওয়াতী গণসংযোগ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ সময় হাটে-বাজারে, পাড়া-মহল্লায় বিভিন্ন শ্রেণীপেশার লোকজনকে দ্বীনের দাওয়াত দেয়া হয়।