বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। কারণ এই সরকারকে তো আমরাই সমর্থন দিয়ে বসিয়েছি।’ শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান।
আর ১২ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান হায়দার, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা প্রমুখ।
বৈঠকে নির্বাচনের বিষয়ে কী ধরনের সিদ্ধান্ত হয়েছে—এমন প্রশ্নে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সবেমাত্র আমাদের একটি জোটের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বাকি জোট ও যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।
কারণ আমরাই তো সরকারকে সমর্থন দিয়েছি।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বহু বছর ধরে জোটবব্ধভাবে কখনো যুগপৎ কাজ করেছি। ফলে আমরা অনেক ঘনিষ্ঠ। কয়েক দিন আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছি।
আমাদের সহযোগী হিসেবে তাদের বৈঠকের বিষয় জানিয়েছি। আগামীতে আমাদের করণীয় কী, তা ঠিক করতে এই বৈঠক। আমরা মূলত সরকারের কাছে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি। নির্বাচনের জন্য যা যা প্রস্তুতি প্রয়োজন, তা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলে আমরা মনে করি। আমরা বলেছি, ফ্যাসিবাদের সঙ্গে যারা যারা জড়িত তাদের বিচার করা ও যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, তাদের বিচার সম্পন্ন করার কথা বলেছি।
১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান হায়দার বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আগে যে কথা বলেছেন বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে একই কথা বলেছেন যে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন করার। আমাদের বক্তব্য যে তার বক্তব্যের মধ্যে অটুট রয়েছে, এ জন্য তাকে স্বাগত জানাই। কিন্তু আমাদের দাবি হচ্ছে, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করা। আমাদের জোর দাবি, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া সম্ভব।’
তিনি আরো বলেন, ‘১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে বলতে চাই, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। তার আগে সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। বিগত সরকারের অন্যায়-অবিচারের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। প্রশাসনে যারা ফ্যাসিবাদের দোসর রয়েছে, তাদের সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’ ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোকে মর্যাদার মাধ্যমে এক জায়গায় নিয়ে আসতে হবে বলেও উল্লেখ করেন ১২ দলীয় জোটের এই প্রধান।