ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মাঝে ভারতের ২৬ রাফাল যুদ্ধবিমান ক্রয়: কাশ্মির সংকটে নতুন মোড়
ভারতের সাম্প্রতিক ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার সিদ্ধান্তটি কাশ্মির অঞ্চলে উত্তেজনার মধ্যে এসেছে, যা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে।
কাশ্মিরের পাহালগামে ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পর ভারত ফ্রান্সের সঙ্গে ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি সই করেছে। এই চুক্তির আওতায় ২২টি একসীট ও ৪টি দ্বিসীট রাফাল বিমান অন্তর্ভুক্ত, যা ভারতীয় নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। এই সিদ্ধান্তকে সামরিক আধুনিকীকরণের অংশ হিসেবে দেখা হলেও, এটি কাশ্মির পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির ইঙ্গিতও বহন করে।
পাকিস্তান ভারতের এই পদক্ষেপকে আগ্রাসন হিসেবে দেখছে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ জানিয়েছেন, ভারত ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে সামরিক অভিযান চালাতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছে এবং পাকিস্তান যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাবে। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান কেবলমাত্র অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে।
কাশ্মিরের পাহালগামে হামলার পর ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে, যার মধ্যে প্রায় ২,০০০ জনকে আটক, সন্দেহভাজনদের বাড়ি ভাঙচুর এবং সেনা টহল বৃদ্ধি অন্তর্ভুক্ত। এই পদক্ষেপগুলো স্থানীয়দের মধ্যে ভয় ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
এছাড়া, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। ভারত পাকিস্তানি কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে, ভিসা প্রদান স্থগিত করেছে এবং সীমান্ত বন্ধ করেছে। পাকিস্তান পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে শিমলা চুক্তি স্থগিত করেছে, আকাশসীমা বন্ধ করেছে এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।
এই উত্তেজনার মধ্যে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয়েই পরিস্থিতি শান্ত করার আহ্বান জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের প্রস্তাব দিয়েছে, এবং চীন উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের অনুরোধ করেছে।
ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার সিদ্ধান্ত কাশ্মির অঞ্চলের সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই সিদ্ধান্তটি সামরিক আধুনিকীকরণের অংশ হলেও, এটি ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য এটি একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়।