ইসরায়েলের দখলকৃত জেরুজালেমের বিভিন্ন অংশে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। এতে স্থানীয়দের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং একটি প্রধান মহাসড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আন্তর্জাতিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছে ইসরায়েল।​

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার (৩০ এপ্রিল) জেরুজালেমের উপকণ্ঠে অবস্থিত এশতাওল বনে বিশাল দাবানলের সৃষ্টি হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে এটি দ্বিতীয় দাবানলের ঘটনা।​

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, জেরুজালেম থেকে তেল আবিব পর্যন্ত প্রধান রুট ১ মহাসড়কে আগুন জ্বলছে এবং আশেপাশের পাহাড়ের চূড়ায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়ছে। এ সময় অনেক মানুষ তাদের গাড়ি ফেলে পালিয়ে যাচ্ছেন।​

কর্মকর্তারা এই দাবানলকে ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক অগ্নিকাণ্ড বলে অভিহিত করেছেন। ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ বিভাগের জেরুজালেম বিভাগীয় কমান্ডার সুমিলিক ফ্রিডম্যান বলেন, “আমরা অনেক বড় একটি দাবানলের মধ্যে রয়েছি। সম্ভবত ইসরায়েলের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড়। আগুন নেভাতে আমাদের যে কার্যক্রম চলছে, তা আরও দীর্ঘ সময় চলবে।”​

এই দাবানল নেভাতে হিমশিম খাচ্ছে ইসরায়েলের কর্মকর্তারা। এরই মধ্যে কয়েকটি দেশের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, দাবানলের আগুন নেভাতে ইতালি এবং ক্রোয়েশিয়া তিনটি অগ্নিনির্বাপক বিমান পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছে। শিগগিরই সেগুলো ইসরায়েলে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।​

এছাড়া গ্রীস, সাইপ্রাস এবং বুলগেরিয়ার সহায়তা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।​

ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ১২০টি অগ্নিনির্বাপক ও উদ্ধারকারী দল কাজ করছে। সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের অনুসন্ধান ও উদ্ধার বাহিনী অভিযানে সহায়তা করছে।​

ইসরায়েলের পুলিশ জানিয়েছে, তিনটি সম্প্রদায়ের লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দাবানলের ঘটনায় কমপক্ষে ১৩ জন আহত হয়েছে।​

একটি নিরাপত্তা সূত্র টাইমস অব ইসরায়েলকে জানিয়েছে, জেরুজালেম এলাকায় আগুন নেভাতে সাহায্য করার জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ অগ্নিনির্বাপক দল পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে। ইসরায়েল এখনো এই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। অতীতে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অগ্নিনির্বাপণ দলগুলো ইসরায়েলের বড় আকারের আগুন নেভাতে সহায়তা করেছে।​

এই দাবানলের ফলে ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।