ব্রিকস সম্মেলনে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা

রিও ডি জেনেইরোতে অনুষ্ঠিত ব্রিকস পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে বাণিজ্য সুরক্ষাবাদের পুনরুত্থানের তীব্র সমালোচনা করেছেন সদস্য রাষ্ট্রগুলো।

চীন, রাশিয়া, ব্রাজিলসহ ১১টি দেশের এই জোট বৈশ্বিক বাণিজ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতি এবং আমদানি নিষেধাজ্ঞাকে বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং রাশিয়ার সের্গেই লাভরভ আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

চীনের ওপর ট্রাম্প প্রশাসন ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে, আর জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে।

ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা স্পষ্ট করেই বলেন, "বাণিজ্য সুরক্ষাবাদ ও শুল্ক যুদ্ধের প্রতি জোটের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট বিরোধিতা রয়েছে।" যদিও ট্রাম্পের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি, বক্তৃতার প্রতিটি বাক্যে তার নীতির প্রতি সমালোচনার সুর ছিল প্রকট।

ব্রিকস, যা বর্তমানে প্রায় বিশ্বের অর্ধেক জনসংখ্যা এবং ৩৯ শতাংশ বৈশ্বিক জিডিপি ধারণ করে, পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন জোট যেমন জি৭-এর একটি কার্যকর বিকল্প হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছে।

এই বৈঠকে আরও আলোচনা হয়েছে গাজা ও ইউক্রেন সংকট নিয়ে। ব্রিকস নেতারা গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চলা খাদ্য ও ওষুধ অবরোধ "অগ্রহণযোগ্য"। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তারা রাশিয়াকে সরাসরি দোষারোপ করেনি; বরং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে।

সম্মেলনে "স্থানীয় মুদ্রা ব্যবহারের গুরুত্ব" নিয়েও আলোচনা হয়েছে, যদিও ডলারের বিকল্প ব্যবহারে এখনো জোটটি খুব সাবধানী পদক্ষেপ নিচ্ছে।

এই বৈঠক এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হলো যখন বৈশ্বিক অর্থনীতি ট্রাম্পের শুল্ক নীতির প্রভাবে চাপের মুখে, আর ব্রাজিল নিজেই জলবায়ু সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে একটি বিভক্ত বিশ্বে শান্তি ও সহযোগিতার বার্তা নিয়ে।