আকাশসীমা বন্ধে ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশই আর্থিক ক্ষতির মুখে

ছবিঃ সংগৃহীত

কাশ্মীরের পাহেলগামে ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এই হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যার মধ্যে অধিকাংশই হিন্দু পর্যটক। ভারত পাকিস্তানের ওপর হামলার পেছনে মদদ দেওয়ার অভিযোগ আনলে, পাকিস্তান তা অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানায়। The Washington Post

এই উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তান প্রথমে ভারতের বিমান সংস্থাগুলোর জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়। এর পাল্টা হিসেবে ভারত ৩০ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত পাকিস্তানি উড়োজাহাজের জন্য আকাশসীমা নিষিদ্ধ করে।

এই আকাশসীমা নিষেধাজ্ঞার ফলে উভয় দেশের বিমান সংস্থাগুলো আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ থাকলে তাদের বার্ষিক অতিরিক্ত ব্যয় প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার হতে পারে। এই ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে বাড়তি জ্বালানি খরচ, দীর্ঘ ফ্লাইট সময় এবং অতিরিক্ত ক্রুর প্রয়োজন।

পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ) তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, কারণ তারা শুধুমাত্র কুয়ালালামপুর রুটে ভারতীয় আকাশসীমা ব্যবহার করে। তবে আকাশসীমা বন্ধের ফলে ওভারফ্লাইট ফি থেকে আয় হারাচ্ছে পাকিস্তান।

এই পরিস্থিতিতে উভয় দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। ভারত পাকিস্তানি কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে এবং ইন্দাস পানি চুক্তি স্থগিত করেছে। পাকিস্তানও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে শিমলা চুক্তি স্থগিত করেছে এবং সীমান্তে বাণিজ্য বন্ধ করেছে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই উত্তেজনা যদি নিয়ন্ত্রণে না আনা যায়, তবে তা বৃহত্তর সংঘাতে রূপ নিতে পারে। উভয় দেশই পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

এই সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও উভয় দেশের নেতাদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

বর্তমানে আকাশসীমা নিষেধাজ্ঞা ২৩ মে পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এই নিষেধাজ্ঞা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।