জাতিসংঘের হুঁশিয়ারি: গাজায় হাজারো ফিলিস্তিনি শিশু চরম খাদ্যসংকটে

সংগৃহীত

ফিলিস্তিনি শিশুরা গাজায় ইসরায়েলের টানা বোমাবর্ষণ ও ভয়াবহ মানবিক সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে [আব্দ এলহকিম খালেদ/রয়টার্স]।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের সম্পূর্ণ অবরোধের ফলে হাজার হাজার শিশু মারাত্মক অপুষ্টির শিকার হয়ে জীবনহানির আশঙ্কায় রয়েছে। ইউনিসেফের তথ্যমতে, ২০২৫ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৯,০০০-এর বেশি শিশু তীব্র অপুষ্টি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মার্চ থেকে ইসরায়েল খাদ্য, পানি ও সব ধরনের ত্রাণ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, “প্রতিদিন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। শিশুদের ক্ষুধা, রোগ এবং মৃত্যুর হুমকি দিন দিন বাড়ছে—এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

বিশ্ব খাদ্য সংস্থা জানিয়েছে, তাদের খাদ্য মজুত ফুরিয়ে গেছে। ফলে যেসব মানুষ কমিউনিটি কিচেনের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন, তাদের অনেকগুলোই বন্ধ হয়ে গেছে।

এক উদ্বাস্ত্ত ফিলিস্তিনি বলেন, “আমরা পুষ্টিকর খাবার চাই না, শুধু চাই যেন আমাদের শিশুরা ক্ষুধায় না মরে। আমি আমার সন্তানকে না খেয়ে মরতে দিতে পারি না।”

ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা গাজায় হামাসের কাছে আটক বন্দিদের মুক্তির চাপ দিতেই এই অবরোধ চালাচ্ছে। কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো বন্দিমুক্তি ঘটেনি।

হামাসের এক নেতা অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েল “ক্ষুধাকে যুদ্ধের হাতিয়ার” হিসেবে ব্যবহার করছে।

জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বলছে, আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় ইসরায়েলের দায়িত্ব হলো ফিলিস্তিনিদের খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা। এই অবরোধ চতুর্থ জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘন করছে।

গাজার চিকিৎসক ও মানবাধিকার কর্মীরা জানিয়েছেন, বর্তমানে সেখানে লক্ষাধিক মানুষ তীব্র খাদ্যসংকটে রয়েছে, এবং শিশুদের জন্য অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫২,৪০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

তথ্যসুত্রঃ আল জাজিরা