পাকিস্তান থেকে সব ধরনের আমদানি নিষিদ্ধ করল ভারত
কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্রগোষ্ঠীর হামলার পর এবার পাকিস্তান থেকে আমদানির ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারত।
পাকিস্তান থেকে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে সব ধরনের আমদানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত। গতকাল শুক্রবার এক সরকারি নোটিশে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে, পাকিস্তান থেকে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে আসা সব ধরনের পণ্যের আমদানি ও পরিবহন নিষিদ্ধ এখন থেকে। এই নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
গত ২২ এপ্রিল ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশন্ত্র গোষ্ঠী হামলা চালায়। এতে ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের প্রায় সবাই পর্যটক। ভারত এ হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে।
শুক্রবার ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের নোটিশে বলা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা ও জনস্বার্থেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যনীতি পরিচালনাকারী বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগের মহাপরিচালকের (ডিজিএফটি) কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে কোনো কিছু আনতে চাইলে সরকারের স্পষ্ট অনুমতি লাগবে।
ডিজিএফটি জানিয়েছে, এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে কোনো পণ্য আনতে হলে সরকারের বিশেষ অনুমতি লাগবে।
ভারত শুধু আমদানি বন্ধ করেই থেমে থাকেনি। সরকার আরও একাধিক ব্যবস্থা নিচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে—পাকিস্তানকে আবার এফএটিএফের ‘গ্রে লিস্টে’ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা। এই আন্তর্জাতিক সংস্থা সন্ত্রাসে অর্থায়ন ও অর্থ পাচার রোধে নজরদারি করে।
ভারতের তরফে বলা হচ্ছে, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে পাকিস্তানকে ঋণ না দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হবে।
ভারতের দাবি, এসব পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো পাকিস্তানে যেসব আর্থিক উৎস সন্ত্রাসবাদে সহায়তা করে, তা বন্ধ করা।
পেহেলগাম হামলার মাত্র দুই দিন পর ভারত সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি পর্যালোচনা করে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হলো সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করা। এ চুক্তির অধীন পাকিস্তান সিন্ধু নদীসহ কয়েকটি নদীর পানি পেয়ে থাকে।
ভারতের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তান সরকারও সিমলা চুক্তি বাতিল করার ঘোষণা দেয়। ১৯৭২ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে এ চুক্তি করা হয়েছিল।
দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি দুই দেশকে আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের পরামর্শ দেন।