সৌদি আরবে শীর্ষ সম্মেলন: আরব নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প  

ছবি : সংগৃহীত

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি মে মাসে সৌদি আরব সফরে যাচ্ছেন। সফরকালে তিনি গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি)ভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে একটি শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন ও আরব কর্মকর্তারা। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম Axios-কে এ তথ্য নিশ্চিত করেন তারা।

ট্রাম্প আগামী ১৩ মে রিয়াদ পৌঁছাবেন এবং ১৪ মে সকালে জিসিসিভুক্ত রাষ্ট্রপ্রধানদের অংশগ্রহণে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সফর ও সম্মেলনের মূল আলোচ্য বিষয় হবে—মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাপুনর্বিন্যাস, বিনিয়োগ সম্প্রসারণ, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতি।

অর্থনৈতিক সহযোগিতাই মূল লক্ষ্য

সূত্র জানায়, এই সফরটি ট্রাম্পের জন্য একটি কৌশলগত সুযোগ, যার মাধ্যমে তিনি উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক অবস্থান পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবেন। বিশেষ করে—বিনিয়োগ, অস্ত্র বিক্রি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে অংশীদারত্ব জোরদার করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ইতোমধ্যে জিসিসি সদস্য রাষ্ট্র—সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, ওমান ও বাহরাইনের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন। আরব বিশ্বে প্রভাবশালী হলেও সম্মেলনে অন্যান্য আরব দেশের অংশগ্রহণের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়।

দোহা ও আবুধাবি সফরও থাকছে

সফরের অংশ হিসেবে ১৪ মে ট্রাম্প কাতারের রাজধানী দোহা সফরে যাবেন এবং আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির সঙ্গে বৈঠক করবেন। পরদিন ১৫ মে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে যাবেন এবং আবুধাবিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।

ইসরায়েল সফর বাতিল, কূটনৈতিক উদ্যোগ নয়

মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, ট্রাম্প এই সফরে ইসরায়েল যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন না। গাজা সংকট, জিম্মি মুক্তির অনিশ্চয়তা এবং যুদ্ধবিরতির অনুপস্থিতির কারণে সেখানে যাওয়ার কৌশলগত সুবিধা দেখছেন না ট্রাম্প প্রশাসন।

হোয়াইট হাউস সফরের বিস্তারিত কর্মসূচি শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করবে বলে জানালেও, ওয়াশিংটনে সৌদি দূতাবাস এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

প্রতিরক্ষা খাতে নতুন চুক্তির সম্ভাবনা

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, সৌদি আরবের সঙ্গে প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন ডলারের ক্ষেপণাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির সম্ভাব্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম বিদেশ সফরও ছিল সৌদি আরব, যেখানে তিনি অর্ধশতাধিক আরব ও মুসলিম দেশের নেতাদের নিয়ে সম্মেলন করেছিলেন। ২০২২ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও সৌদি সফরে গিয়ে জিসিসিভুক্ত দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।