২ শতাধিক সাপের কামড় খাওয়া ব্যক্তির রক্তে যুগান্তকারী অ্যান্টিভেনম
মার্কিন নাগরিক টিম ফ্রিয়েড প্রায় দুই দশক ধরে ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের শরীরে সাপের বিষ প্রবেশ করিয়ে আসছেন। তার রক্তের ওপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীরা এক অভিনব অ্যান্টিভেনম তৈরিতে সফল হয়েছেন — এমন খবর জানিয়েছে বিবিসি।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন এই অ্যান্টিভেনম বিভিন্ন প্রাণীর ওপর পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে এবং এটি একাধিক ভয়াবহ বিষ থেকে তাদের সুরক্ষা দিয়েছে।
ফ্রিয়েড নিজেও চেয়েছিলেন এমন একটি প্রতিষেধক তৈরি করতে, যা সব ধরনের সাপের বিষের বিরুদ্ধে কাজ করবে। ২০০১ সালে শুরু হওয়া তার এই মিশনে তিনি টানা ১৮ বছর ধরে বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত দুই শতাধিক সাপের কামড় সহ্য করেছেন, কখনও আবার সরাসরি সংগ্রহ করা বিষ নিজের শরীরে ইনজেকশন করেছেন।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সাপের কামড়ের প্রতিষেধক সাধারণত সুনির্দিষ্টভাবে তৈরি করতে হয় — সাপের প্রজাতি ও অঞ্চলের ভিত্তিতে এগুলোর ভিন্নতা থাকে।
২০১৭ সালে রোগতত্ত্ববিদ জ্যাকব গ্লানভিল সংবাদমাধ্যমে ফ্রিয়েডের বিষয়ে জানতে পারেন এবং সরাসরি ফোন করে তার রক্ত নিয়ে গবেষণার আগ্রহ প্রকাশ করেন। উত্তরে ফ্রিয়েড বলেন, “অবশেষে! এরকম একটা ফোনেরই তো অপেক্ষায় ছিলাম।”
প্রাথমিকভাবে ফ্রিয়েড ৪০ মিলিলিটার রক্ত দেন গবেষণার জন্য। আট বছরের গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা এমন একটি অ্যান্টিভেনম তৈরি করতে পেরেছেন, যা ১৯টি ভয়াবহ বিষধর সাপের কামড়ের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে সক্ষম।
এখনও এটি মানুষের ওপর পরীক্ষিত হয়নি, তবে যেহেতু মানবদেহ থেকে সংগৃহীত অ্যান্টিবডি দিয়ে এটি তৈরি, বিজ্ঞানীরা আশা করছেন এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সাপের কামড়ে প্রতিবছর বিশ্বে হাজার হাজার মানুষ মারা যান এবং কয়েক লাখ মানুষ স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে পড়েন।