ইরানের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা না হলে পরমাণু আলোচনা 'অপ্রয়োজনীয়': লারিজানি
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উপদেষ্টা ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা আলী লারিজানি সম্প্রতি পরমাণু আলোচনার বিষয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ইরানের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা না হলে এমন আলোচনা 'অপ্রয়োজনীয়' এবং 'অবান্তর'।
শনিবার (৩ মে) তেহরানের শাহেদ বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন লারিজানি। তিনি বলেন, "আলোচনায় বসা কিংবা না বসা, এটি নিজে কোনো মূল্য বহন করে না। মূল বিষয় হলো আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় স্বার্থ আদায় হওয়া। যদি আলোচনা সে লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়, তাহলে তা চালিয়ে যাওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই"।
তিনি আরও বলেন, "যদি পরমাণু আলোচনা সমস্যার সমাধানে সহায়ক হয়, তাহলে তা চালানো উচিত। কিন্তু যদি ফলপ্রসূ না হয়, তবে তা বন্ধ করা শ্রেয়" ।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে চতুর্থ দফার পরোক্ষ আলোচনা ৩ মে হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়েছে। এর আগে, ওমানের মধ্যস্থতায় ১২, ১৯ ও ২৬ এপ্রিল মাসকাট ও রোমে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র তিন দফা পরোক্ষ বৈঠক করেছে। আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে একটি সমঝোতা এবং তেহরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা ।
আলোচনার স্থগিত হওয়ার বিষয়ে লারিজানি বলেন, "আলোচনার সময় ও পরিবেশ পর্যালোচনা করে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়াই শ্রেয়, সরাসরি আলোচনা গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করার আগে বাস্তবতা বিশ্লেষণ জরুরি" ।
তিনি আরও বলেন, "ইরান কখনোই বিশ্বশক্তির কাছে মাথানত করেনি, আর এ কারণেই পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা ও চাপ দিয়ে ইরানকে নতজানু করতে চায়" ।
উল্লেখ্য, ইরান তার পরমাণু কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ বলে দাবি করে আসছে। তবে লারিজানি পূর্বে সতর্ক করেছিলেন যে, যদি যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল ইরানের ওপর আক্রমণ করে, তাহলে তেহরান পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনে বাধ্য হতে পারে ।
এই প্রেক্ষাপটে, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরবর্তী আলোচনা কবে অনুষ্ঠিত হবে তা অনিশ্চিত। তবে ইরান স্পষ্ট করেছে যে, তারা কেবলমাত্র তখনই আলোচনায় আগ্রহী হবে, যখন তা তাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করবে।