পাকিস্তানের কাছে চার দিন যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো গোলাবারুদ আছে, ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি

ফাইল ছবি

পাকিস্তান সেনাবাহিনী বর্তমানে মারাত্মক গোলাবারুদ সংকটে ভুগছে, যা তাদের যুদ্ধ সক্ষমতাকে মাত্র ৯৬ ঘণ্টা বা চার দিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে ফেলেছে। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর বরাত দিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এই তথ্য জানিয়েছে।

এই সংকটের মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সম্প্রতি পাকিস্তানের ইউক্রেন ও ইসরায়েলের সঙ্গে অস্ত্র রপ্তানি চুক্তি। বিশেষ করে ১৫৫ মিমি আর্টিলারি শেল ইউক্রেনে পাঠানোর ফলে পাকিস্তানের নিজস্ব মজুত আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। এর ফলে এম১০৯ হাউইটজার ও বিএম-২১ রকেট সিস্টেমের মতো গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র ব্যবস্থাগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় গোলাবারুদের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

পাকিস্তান অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি (পিওএফ) পুরনো অবকাঠামো ও সীমিত উৎপাদন ক্ষমতার কারণে এই ঘাটতি পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। পিওএফ-এর প্রধান লক্ষ্য অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ হলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা তা করতে পারছে না।

এই সংকট পাকিস্তানের সামরিক নীতিকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে, যা মূলত ভারতের সংখ্যাগত সুবিধার মোকাবিলায় দ্রুত মোতায়েনযোগ্যতা ও আর্টিলারি নির্ভরতার ওপর ভিত্তি করে গঠিত। তবে বর্তমানে ১৫৫ মিমি শেল ও ১২২ মিমি রকেটের ঘাটতির কারণে এই কৌশল বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়েছে।

এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর উচ্চপর্যায়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। গত ২ মে অনুষ্ঠিত স্পেশাল কর্পস কমান্ডার্স কনফারেন্সে এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় নতুন গোলাবারুদের গুদাম নির্মাণ করছে, তবে পর্যাপ্ত মজুত না থাকায় এই উদ্যোগের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল ভারতের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের গোলাবারুদের সংকট তাদের সামরিক প্রস্তুতিকে আরও দুর্বল করে তুলেছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, স্বল্পমেয়াদি অর্থনৈতিক লাভের জন্য অস্ত্র রপ্তানি করে পাকিস্তান দীর্ঘমেয়াদে কৌশলগত ক্ষতির মুখে পড়েছে। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি এবং ঋণের বোঝা এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

এই সংকটময় পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্বের জন্য এটি একটি গুরুতর সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।