পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়াই রাশিয়ার অগ্রগতি

সংগৃহীত

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তৃতীয় বছরে পা দেওয়ার পর যুদ্ধের দৃশ্যপটে বড় রকমের পরিবর্তন এসেছে। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করেও রাশিয়া ইতোমধ্যে ইউক্রেনের প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে, যা বাংলাদেশের মোট আয়তনের প্রায় সমান। এমন অবস্থায় অনেকে আশঙ্কা করছেন, বিশ্ব আবারও একটি বৃহৎ সংঘর্ষ বা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ইউক্রেনে যুদ্ধের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কোনো প্রয়োজন রাশিয়ার নেই। তিনি বলেন, যুদ্ধ শেষ করতে রাশিয়ার কাছে পর্যাপ্ত সামরিক শক্তি রয়েছে; শুধু প্রয়োজন সময় ও ধৈর্যের।

পুতিন আরও বলেন, রাশিয়াকে এমন কিছু করতে প্ররোচিত করা হয়েছিল, যা ভুল সিদ্ধান্ত হতো, তবে এখনো পর্যন্ত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দেয়নি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতেও এমন পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হবে।

একদিকে যখন পুতিন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে যুদ্ধের অগ্রগতির কথা বলছেন, তখন অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সংঘর্ষ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, এটি শুধুমাত্র ইউক্রেনের যুদ্ধ নয়, বরং রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এক প্রক্সি যুদ্ধ। ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, যদি এই যুদ্ধকে নিয়ন্ত্রণে না আনা যায়, তবে তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নিতে পারে।

এদিকে সম্প্রতি প্রচারিত রুশ তথ্যচিত্র ‘রাশিয়া, ক্রেমলিন, পুতিন - ২৫ বছর’-এ পুতিনের দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলা ও ভূরাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, বার্লিন প্রাচীর ভাঙার পর থেকে পশ্চিমা বিশ্বের কার্যকলাপ রাশিয়াকে ঘিরে রেখেছে অবজ্ঞা ও হুমকির আবহে। ন্যাটোর সম্প্রসারণ ও রুশ বলয়ে হস্তক্ষেপকে পুতিন রাশিয়ার বর্তমান অবস্থানের পেছনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেখছেন।

এখন আন্তর্জাতিক মহল নজর রাখছে—ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার অগ্রগতি ও পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করার ঘোষণার প্রেক্ষিতে ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়।