পাকিস্তানে হামলায় কোন কোন অস্ত্র ব্যবহার করেছে ভারত

ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী "অপারেশন সিঁদুর" নামে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ভারতের দাবি অনুযায়ী, এই হামলা পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বা ও জইশ-ই-মোহাম্মদের অবকাঠামো লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়, যারা ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ে ২৬ জন পর্যটককে হত্যার ঘটনার জন্য দায়ী।

পাকিস্তান এই হামলাকে "যুদ্ধ ঘোষণার কার্যক্রম" হিসেবে আখ্যায়িত করে। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ জানায়, বাহাওয়ালপুরের আহমদপুর ইস্ট এলাকায় একটি মসজিদে হামলায় ১৩ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। মোট নিহতের সংখ্যা ২৬ জন এবং আহত ৪৬ জন বলে জানানো হয়েছে।

ভারতের "অপারেশন সিন্দুর" অভিযানে পাকিস্তানে ব্যবহৃত অস্ত্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল:

  1. SCALP ক্রুজ মিসাইল: এই দীর্ঘপাল্লার (প্রায় ২৫০ কিমি) আকাশ থেকে নিক্ষেপযোগ্য মিসাইলটি রাফায়েল যুদ্ধবিমানে সংযুক্ত ছিল। এটি সুনির্দিষ্টভাবে সুরক্ষিত অবকাঠামো, বাংকার ও সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে আঘাত হানতে সক্ষম।

  2. HAMMER বোমা: এই স্মার্ট বোমাটি মাঝারি পাল্লার (প্রায় ৫০-৭০ কিমি) লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে ব্যবহৃত হয়। এটি শক্তিশালী অবকাঠামো ধ্বংসে কার্যকর, বিশেষ করে কংক্রিট নির্মিত ভবন ও বাংকারে।

  3. লোইটারিং মিউনিশন (কামিকাজি ড্রোন): এই আত্মঘাতী ড্রোনগুলো নির্দিষ্ট এলাকায় ঘুরে বেড়িয়ে লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বা দূরনিয়ন্ত্রিতভাবে হামলা চালায়। এগুলো নজরদারি ও চূড়ান্ত আঘাত হানার কাজে ব্যবহৃত হয়।

এই অভিযানে ভারতীয় বিমান, নৌ ও স্থলবাহিনী একযোগে অংশ নিয়েছে। রাফায়েল যুদ্ধবিমান থেকে SCALP ও HAMMER মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছে। অভিযানটি প্রায় ২৩ মিনিট স্থায়ী ছিল এবং পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি স্থানে সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে আঘাত হানা হয়েছে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই অভিযানকে "সুনির্দিষ্ট, পরিমিত এবং উত্তেজনা-নিরসনমূলক" বলে বর্ণনা করেছে, যেখানে শুধুমাত্র সন্ত্রাসী অবকাঠামো লক্ষ্য করা হয়েছে এবং পাকিস্তানি সামরিক স্থাপনাগুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।

এই অভিযানে ব্যবহৃত অস্ত্রগুলোর মাধ্যমে ভারত সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে তাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও কৌশলগত পরিকল্পনার প্রদর্শন করেছে।