"জরুরি ভিত্তিতে ভারতের সীমান্তবর্তী বিমানবন্দর বন্ধ, বাতিল বহু ফ্লাইট"
অপারেশন সিন্দুরের পর সীমান্তে সতর্কতা, উত্তর-পশ্চিম ভারতের ১৮টি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ
সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা প্রতিনিধি:
পাকিস্তানের জইশ-ই-মোহাম্মদ ঘাঁটিতে চালানো ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পর সীমান্ত অঞ্চলে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সম্ভাব্য পাল্টা হামলার আশঙ্কায় উত্তর-পশ্চিম ভারতের অন্তত ১৮টি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে নয়াদিল্লি। বন্ধ হওয়া বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে রয়েছে শ্রীনগর, লেহ, জম্মু, অমৃতসর, পাঠানকোট, চণ্ডীগড়, যোধপুর, জয়সলমীর, শিমলা, ধর্মশালা ও জামনগর।
এই সতর্কতামূলক সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়েছে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিমান সংস্থা ইন্ডিগো। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকারের নিরাপত্তা নির্দেশনার ফলে আগামী ১০ মে পর্যন্ত ১৬৫টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
দিল্লি বিমানবন্দর থেকেও ব্যাপক ফ্লাইট বাতিল
ফ্লাইট বাতিলের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি দিল্লি ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে, যেখানে শুধুমাত্র বৃহস্পতিবারেই বাতিল হয়েছে প্রায় ৩৫টি ফ্লাইট। এছাড়াও এয়ার ইন্ডিয়া, স্পাইসজেট ও আকাসা এয়ার-সহ অন্যান্য সংস্থাও জম্মু, শ্রীনগর, লেহ ও অমৃতসরগামী ফ্লাইট বাতিল করেছে।
যাত্রীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থার উদ্যোগ
বিমান সংস্থাগুলো জানিয়েছে, বাতিল হওয়া ফ্লাইটের ক্ষেত্রে যাত্রীদের পুরো টিকিট মূল্য ফেরত দেওয়া হবে অথবা পরবর্তী সময়সূচি অনুযায়ী পুনর্নির্ধারণের সুযোগ থাকবে।
আন্তর্জাতিক ফ্লাইটেও এড়ানো হচ্ছে পাকিস্তানের আকাশসীমা
শুধু অভ্যন্তরীণ নয়, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রভাবে আন্তর্জাতিক রুটেও পরিবর্তন এসেছে। কাতার এয়ারওয়েজ ইতোমধ্যে ২৫টিরও বেশি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে বিকল্প রুট ব্যবহার করেছে।
এছাড়া আমেরিকান এয়ারলাইনস, ডাচ এয়ারলাইন কেএলএম এবং সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস-ও পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নিরাপত্তার শীর্ষে দেশ
ভারতীয় সেনাবাহিনীর সামরিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দেশজুড়ে সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সূত্র বলছে, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে সেনা, বিমান ও নৌবাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
বিশ্লেষণ:
‘অপারেশন সিন্দুর’ যে কেবল সীমান্তে সামরিক প্রতিক্রিয়া নয়, বরং তার প্রভাব দেশব্যাপী নিরাপত্তা ও পরিবহন ব্যবস্থায় পড়েছে, সেটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এই সাময়িক অবরোধ ও এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে।