পাকিস্তানকে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন আইএমএফের, আপত্তি ভারতের
পাকিস্তানকে চলমান এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটির (ইএফএফ) আওতায় এক বিলিয়ন ডলার তৎক্ষণাৎ বিতরণের অনুমোদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। পারমাণবিক অস্ত্রধর প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানকে দেয়া ঋণের বিষয়ে পর্যালোচনার জন্য আইএমএফের কাছে অনুরোধ করেছে ভারত।
ভারতের অভিযোগ, এ অর্থ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সীমান্তে সন্ত্রাসবাদে ব্যবহৃত হতে পারে। ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় আইএমএফ পাকিস্তানের জন্য তাদের রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) এর আওতায় ১.৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্রস্তাবও পর্যালোচনা করেছে।
ভারত দাবি করেছে, আইএমএফ সংস্কার বাস্তবায়নে পাকিস্তানের অতীত রেকর্ড ভালো নয়। পাশাপাশি, তহবিলের অপব্যবহারের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। এ কারণে নয়াদিল্লি ভোটদানে বিরত ছিল। ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সীমান্তে সন্ত্রাসবাদ চালাতে পৃষ্ঠপোষকতায় অর্থ সহায়তা দেয়া বিপজ্জনক বার্তা দেয়। এটি তহবিল সংস্থাগুলো ও দাতাদের সুনাম ঝুঁকিতে ফেলেছে এবং বৈশ্বিক মূল্যবোধকে ক্ষুণ্ন করেছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ আইএমএফের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এটি ভারতের ‘একতরফা কৌশলের পরাজয়’ এবং পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আইএমএফ কর্মসূচি নস্যাৎ করার ভারতীয় প্রয়াস ব্যর্থ হয়েছে। ভারত ‘একতরফা আগ্রাসনের’ মাধ্যমে ‘দৃষ্টি বিভ্রান্ত করার ষড়যন্ত্র’ করছে।
নতুন তহবিল বিতরণের ফলে ইএফএফের আওতায় পাকিস্তানের জন্য আইএমএফের মোট অর্থায়ন প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। গত বছরের জুলাইয়ে সম্মত হওয়া পুরো ৭ বিলিয়ন ডলারের প্যাকেজটি ৩৯ মাসে সাত কিস্তিতে বিতরণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে এর জন্য সফল সংস্কার কার্যক্রম, যেমন কর কাঠামো পুনর্গঠন, জ্বালানি খাতে সংস্কার এবং ইউটিলিটি ও শিল্পক্ষেত্রে মূল্য সমন্বয়ের মতো শর্ত পূরণ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ জন সাধারণ মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এর পর থেকে হামলা-পাল্টা হামলা চলছে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কূটনৈতিক ও আর্থিক নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারত, যার লক্ষ্য পাকিস্তানের অর্থপ্রবাহ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা।