গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে মোদিকে যুদ্ধ বন্ধে চাপ দেয় যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হলেও, এর পেছনে রয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা।

 

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলি এমন কিছু তথ্য পেয়েছিল যা ইঙ্গিত দেয় যে, ভারত-পাকিস্তান সংঘাত দ্রুত পরমাণু যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে। এই তথ্যের ভিত্তিতে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স শুক্রবার (৯ মে) ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করে সরাসরি পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানান। তিনি একটি "সম্ভাব্য বিকল্প পথ" বা "off-ramp" এর কথাও উল্লেখ করেন, যা পাকিস্তান গ্রহণ করতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা ছিল

 

ভ্যান্সের ফোনালাপের পর, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুজি ওয়াইলস ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের সামরিক প্রধানদের সঙ্গে রাতভর আলোচনা চালিয়ে যান। তাদের লক্ষ্য ছিল উভয় পক্ষকে সরাসরি আলোচনায় ফিরিয়ে আনা এবং উত্তেজনা কমানো

 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার (১০ মে) ঘোষণা করেন যে, ভারত ও পাকিস্তান একটি "সম্পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক" যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তবে, এই ঘোষণা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভারত পাকিস্তানকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে, যা পাকিস্তান অস্বীকার করে

 

এই ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে, ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্সের অবস্থান নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি দেখা যায়। তিনি পূর্বে বলেছিলেন যে, ভারত-পাকিস্তান সংঘাত "আমাদের বিষয় নয়"। তবে, পরবর্তীতে তিনি মোদিকে ফোন করে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান, যা ট্রাম্প প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ নীতিগত দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত দেয়

 

যদিও যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে, তবে উভয় দেশের মধ্যে অবিশ্বাস ও রাজনৈতিক চাপের কারণে এই শান্তি কতটা স্থায়ী হবে তা অনিশ্চিত। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘমেয়াদী শান্তির জন্য আরও গভীর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন

এই ঘটনাপ্রবাহ থেকে স্পষ্ট যে, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গোয়েন্দা তথ্য, কূটনৈতিক যোগাযোগ এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।