আদালতের নির্দেশে মুক্তি পেলেন সেই তুর্কি শিক্ষার্থী
শিরোনাম:
৪৫ দিন পর যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী আটককেন্দ্র থেকে মুক্তি পেলেন তুর্কি পিএইচডি শিক্ষার্থী রুমিয়াসা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি শিক্ষার্থী রুমিয়াসা অজতুর্ক অবশেষে ৪৫ দিনের আটকাদেশের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। স্থানীয় সময় ৯ মে, লুইজিয়ানার একটি ফেডারেল আদালত তার মুক্তির আদেশ দেন। পরদিনই (১০ মে) তিনি ফিরে যান ম্যাসাচুসেটসের বোস্টনে।
৩০ বছর বয়সী রুমিয়াসা তুরস্কের নাগরিক এবং টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস-এর পিএইচডি গবেষক। বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “অত্যন্ত কঠিন একটি সময় পার করেছি। এখন আমি লেখাপড়ায় মনোযোগ দিতে চাই।”
তিনি আরও বলেন, “এই ৪৫ দিনে আমি আমার স্বাধীনতা ও শিক্ষা—দুই-ই হারিয়েছি। তবে যারা আমার পাশে ছিলেন, সহানুভূতি দেখিয়েছেন, আমি তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।”
গত ২৫ মার্চ ম্যাসাচুসেটসের সামারভিলে নিজের বাসা থেকে বের হওয়ার পর ‘অপহরণ’ কায়দায় তাকে তুলে নিয়ে যায় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ, এমনটাই অভিযোগ তার ঘনিষ্ঠদের। এপি প্রকাশিত একটি ভিডিওতে মুখোশধারী সাত ব্যক্তি রুমিয়াসাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
এরপর তাকে নিউ হ্যাম্পশায়ার ও ভার্মন্ট ঘুরিয়ে লুইজিয়ানার বাসিল অভিবাসী আটককেন্দ্রে রাখা হয়। পাশাপাশি বাতিল করা হয় তার ছাত্রভিসা।
রুমিয়াসা অভিযোগ করেন, ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে লিখিত একটি কলামের জন্যই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার দাবি, এতে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী বাকস্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয়েছে।
বর্তমানে তার মামলা বিচারাধীন রয়েছে ভার্মন্টের বার্লিংটন-এর ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে, বিচারক উইলিয়াম সেশন্স-এর অধীনে। জামিন শুনানিতে রুমিয়াসা ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে নিজের স্বাস্থ্য সমস্যা ও ডক্টরেট গবেষণার বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
বিচারক সেশন্স রায় ঘোষণায় বলেন, “একটি কলাম লেখা ছাড়া রুমিয়াসার বিরুদ্ধে গ্রেফতারের পক্ষে সরকার অন্য কোনো যথার্থ প্রমাণ দেয়নি। এছাড়া তার অভিবাসন সম্পর্কিত পর্যালোচনার বিষয়েও যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ কোনো জবাব দেয়নি।”
তাকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ছাড়াই মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) পরামর্শের ভিত্তিতে পরবর্তীতে মুক্তির শর্তে পরিবর্তন আনা হতে পারে।
রুমিয়াসার মুক্তির খবরে খুশি হয়েছেন ম্যাসাচুসেটসের ডেমোক্র্যাট সিনেটর এড মার্কি। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, “তোমাকে ফিরে পেয়ে আমরা আনন্দিত। তোমার সংগ্রাম আমাদের গর্বিত করেছে।”
গত বছর টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েল বিরোধী বিনিয়োগ প্রত্যাহারের দাবি ওঠে। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানের সমালোচনায় রুমিয়াসা ও আরও তিন শিক্ষার্থী **‘দ্য টাফটস ডেইলি’**তে একটি কলাম লেখেন। এর পরপরই তাকে গ্রেফতার করা হয়।