মজলুম শ্রমিকের দোয়া আল্লাহর দরবারে অগ্রাধিকার পায়: ইসলামের দৃষ্টিতে শ্রমিকের মর্যাদা ও অধিকার
ইসলাম একটি শান্তি ও ন্যায়ভিত্তিক ধর্ম, যা সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করে। শ্রমিকদের প্রতি সুবিচার ও সম্মান প্রদর্শনের বিষয়ে ইসলাম সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করেছে।
ইসলামে শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত হয়েছে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "আমি মানুষের জন্য তার শ্রমের ফলাফলকেই নির্ধারিত করেছি।" (সূরা আন-নাজম, আয়াত: ৩৯) । এই আয়াত শ্রমের মর্যাদা ও শ্রমিকের ন্যায্য প্রতিদান পাওয়ার অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "শ্রমিকেরা তোমাদের ভাই। আল্লাহ তাদের তোমাদের অধীন করেছেন। সুতরাং যার ভাইকে তার অধীন করেছেন, সে যেন তাকে তাই খাওয়ায় যা সে খায়, সে কাপড় পরিধান করায়, যা সে পরিধান করে। তাকে সামর্থ্যের অধিক কোনো কাজের দায়িত্ব দেবে না। যদি এমনটা করতেই হয়, তাহলে সে যেন তাকে সাহায্য করে।" (সহিহ বুখারি: ৫৬১৭) ।
ইসলামে মজলুমের দোয়া অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "মজলুমের দোয়া ও আল্লাহর মধ্যে কোনো অন্তরাল নেই।" (সহিহ বুখারি) । অতএব, শ্রমিকদের প্রতি অবিচার ও জুলুম আল্লাহর কাছে কঠোরভাবে নিন্দনীয়।
ইসলামে শ্রমিকের মজুরি সময়মতো পরিশোধ করার নির্দেশনা রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "তোমরা শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে দাও তার ঘাম শুকানোর আগেই।" (ইবনে মাজাহ: ২৪৪৩) । এটি শ্রমিকের প্রতি সম্মান ও ন্যায়বিচারের প্রতীক।
ইসলামে মালিক ও শ্রমিকের সম্পর্ক ভ্রাতৃত্বপূর্ণ হওয়া উচিত। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "নিশ্চয় মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই।" (সূরা হুজুরাত, আয়াত: ১০) । এই সম্পর্কের ভিত্তি হওয়া উচিত পারস্পরিক শ্রদ্ধা, স্নেহ ও দায়িত্ববোধ।
ইসলাম শ্রমিকদের মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করেছে। মজলুম শ্রমিকের দোয়া আল্লাহর দরবারে অগ্রাধিকার পায় এবং অবিচারকারীদের জন্য কঠোর পরিণতি বয়ে আনে। সুতরাং, সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হলে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা অপরিহার্য।