ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অচলাবস্থা: একটি দুর্ঘটনায় অচল ৪০ কিমি সড়ক

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা নগরের বাসিন্দা কামাল উদ্দিন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রওনা হয়েছিলেন রাজধানীর উদ্দেশে। শহরতলির শাসনগাছা বাস টার্মিনাল থেকে সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটের দিকে তাঁর বাস ছেড়ে যায়। ভেবেছিলেন, সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যেই ঢাকায় থাকবেন। কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশ পার হতেই বেজে যায় বেলা দেড়টা।

সেদিন বেলা ১টা ৫৫ মিনিটে কামাল উদ্দিন ছিলেন মহাসড়কের মুন্সিগঞ্জ অংশের ভরেরচরে। এত সময় লেগে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, চান্দিনার নূরতলা এলাকায় ঢাকামুখী লেনে একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কে আড়াআড়িভাবে উল্টে আছে। গত বুধবার রাত দুইটা থেকে এমন অবস্থা। হাইওয়ে পুলিশ যানটি সরিয়ে নিতে না পারায় দীর্ঘ যানজট দেখা দিয়েছে।

শেষ পর্যন্ত কামাল উদ্দিনের রাজধানী পৌঁছাতে বিকেল চারটা বেজে যায়। কামাল উদ্দিন পৌঁছালেও ভোগান্তি আর যানজটের কারণে অনেকে যাত্রা বাতিল করে দেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মাঝেমধ্যেই ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ রকম দীর্ঘ যানজট দেখা দেয়। এর প্রধান কারণ দুটি। একটি হলো, কোনো দুর্ঘটনার পর দুর্ঘটনাকবলিত যান সড়ক থেকে দ্রুত সরাতে না পারা। আর উল্টো পথে গাড়ি চালানো। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁদের সক্ষমতার ঘাটতি আছে। রেকার আছে মাত্র তিনটি, নেই কোনো ক্রেন। এ কারণে সড়ক থেকে দুর্ঘটনাকবলিত যান সরাতে সময় লেগে যাচ্ছে। এতে দীর্ঘ হয় যানজট।

যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা বলছেন, দুর্ঘটনাকবলিত কোনো যান সড়কে ঘণ্টাখানেক পড়ে থাকলে যানজট কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। কখনো কখনো যানজট বিস্তৃত হয় ২০ কিলোমিটারের বেশি সড়কে। সর্বশেষ গত বুধবার রাত দুটার দিকে চান্দিনার নূরতলা এলাকায় ঢাকামুখী লেনে একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কে আড়াআড়ি হয়ে পড়ে যায়। এ ঘটনার কারণে নিমসার থেকে মেঘনা-গোমতী সেতু পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

দুর্ঘটনাকবলিত যানটি বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উদ্ধার করে ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার পুলিশ।

উদ্ধারে ৬ ঘণ্টার বেশি সময় লেগে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, কাভার্ড ভ্যানটি পণ্য দিয়ে ভর্তি (ওভারলোড) থাকার কারণে রেকার দিয়ে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে রেকার দিয়ে টেনে এটিকে সোজা করা হয়। ফলে এক পাশ দিয়ে যান চলাচল শুরু করা সম্ভব হয়। এরপর কুমিল্লা থেকে একটি বেসরকারি সংস্থার ক্রেন এনে কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করতে সকাল সাড়ে ৮টা বেজে যায়।

কুমিল্লা থেকে ঢাকাগামী একটি বাসের চালক হুমায়ুন কবির বলেন, প্রতিটি দুর্ঘটনার পরই এমন দুর্ভোগে পড়তে হয়। মাসে ৪ থেকে ৫ বার এই সমস্যায় পড়েন তাঁরা।