ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করলো নভোএয়ার

সংগৃহীত

দেশের অন্যতম বেসরকারি এয়ারলাইন্স নভোএয়ার বন্ধ হয়ে যাওয়ার গুঞ্জন চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। শেষমেশ সেটিই বাস্তবে পরিণত হয়েছে। আপাতত সব ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ রেখেছে নভোএয়ার।

শুক্রবার, ২ মে থেকে এয়ারলাইন্সটির ফ্লাইট চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে। ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে প্রথম যাত্রী পরিবহনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। যাত্রীসেবার মানে প্রশংসা অর্জন করেছিল নভোএয়ার।

বন্ধ ঘোষণার পূর্ব পর্যন্ত নভোএয়ার প্রতিদিন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর ও রাজশাহী গন্তব্যে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা করত।

তবে বন্ধের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাদের ওয়েবসাইটেও টিকিট কেনার অপশন বন্ধ রয়েছে।

নভোএয়ারের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়নি, বরং বড় পরিসরে ব্যবসায়িক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সাময়িকভাবে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনায় বড় আকারের উড়োজাহাজ সংগ্রহের লক্ষ্যে বহরে থাকা পাঁচটি এটিআর এয়ারক্র্যাফট বিক্রি করার কাজ শুরু হয়েছে। এই বিক্রয় প্রক্রিয়া মে মাসের মধ্যেই শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং ২ মে থেকে আগ্রহী সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে ইন্সপেকশন শুরু হয়েছে। ফলে ফ্লাইট চলাচল আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।

সূত্রটি আরও জানায়, যেসব যাত্রী অগ্রিম টিকিট কিনেছিলেন, তাদেরকে পূর্ণ অর্থ ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০ এপ্রিল থেকেই নতুন টিকিট বিক্রি বন্ধ করা হয়েছিল।

নভোএয়ারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, তারা তাদের ছোট আকারের উড়োজাহাজ বিক্রি করে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনার উপযোগী ওয়াইড-বডি এয়ারক্র্যাফট কেনার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় নির্ধারিত সময়মতো সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। লিজে নেওয়ার মতো এয়ারক্র্যাফট না পাওয়াসহ বড় নির্মাতা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকেও উড়োজাহাজ সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এর ফলে নভোএয়ার স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতেও রয়েছে।

এর আগে নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান জানিয়েছিলেন, প্রতিষ্ঠানটির বোর্ডে নতুন একজন বিনিয়োগকারী যুক্ত হবেন এবং আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত সেই বিনিয়োগকারীর বিষয়েও কোনো নিশ্চয়তা মেলেনি।

উল্লেখ্য, নভোএয়ার ছাড়াও এর আগে দেশে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, জিএমজি এয়ারলাইন্স এবং রিজেন্ট এয়ারওয়েজের মতো কয়েকটি বেসরকারি এয়ারলাইন্স কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।