বাংলাদেশে মলিকুলার প্রযুক্তির ব্যবহার: রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার
বাংলাদেশে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসায় আধুনিক মলিকুলার প্রযুক্তির ব্যবহার একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার (৩ মে) স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগ এবং হিউম্যান জেনেটিকস রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (এইচজিআরটিসি) আয়োজিত যৌথ বৈজ্ঞানিক কর্মশালায় বক্তারা এমন মন্তব্য করেন। কর্মশালাটির শিরোনাম ছিল "ওয়ার্কশপ অন মলিকুলার ডায়াগনসিস অ্যান্ড প্রিসিশন মেডিসিন"।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, প্রিসিশন মেডিসিন ও মলিকুলার ডায়াগনসিস যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারলে দেশের স্বাস্থ্য খাতে একটি বড় পরিবর্তন আসবে। গবেষণায় বিনিয়োগ ও মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ভবিষ্যতের চিকিৎসাব্যবস্থাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করা সম্ভব।
বিশেষ অতিথি হিসেবে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন ইবনে সিনা হাসপাতালের (মালিবাগ শাখা) প্রশাসনিক ইনচার্জ কাজী মো. মহিউদ্দিন কাইয়ুম এবং স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান। কর্মশালার সভাপতিত্ব করেন অণুজীব বিজ্ঞান অনুষদের চেয়ারম্যান ও অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর মো. আফতাব উদ্দিন।
ডাক্তার, বায়োকেমিস্ট, বায়োটেকনোলজিস্ট এবং লাইফ সায়েন্স সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পেশাজীবী ও গবেষণায় আগ্রহী শিক্ষার্থীরা দিনব্যাপী কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
এইচজিআরটিসি’র প্রতিষ্ঠাতা মো. আরিফুর রহমান জানান, জেনেটিক রোগ শনাক্তকরণে প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্তকরণ এবং লক্ষ্যভিত্তিক থেরাপির জন্য মলিকুলার প্রযুক্তি অত্যন্ত কার্যকর। দক্ষ জনবল তৈরি করা গেলে দেশেই উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
ন্যাশনাল সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার রিসার্চ সেন্টারের প্রজেক্ট ডিরেক্টর ড. মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, এসব আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে পারদর্শী পেশাজীবীদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে, আর এইচজিআরটিসির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সেই ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
কর্মশালায় প্রশিক্ষণ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাকির হোসেন হাওলাদার এবং অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম।
এইচজিআরটিসি’র চিফ কনসালটেন্ট ড. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিশ্বজুড়ে ক্যান্সারের মতো জটিল রোগে প্রিসিশন মেডিসিনের গুরুত্ব বাড়ছে। বাংলাদেশেও এই প্রযুক্তির কার্যকর প্রয়োগ চিকিৎসাক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করবে।
সমাপনী বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ অন্যান্য অতিথিরা এইচজিআরটিসির উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে যৌথভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। অণুজীব অনুষদের চেয়ারম্যানও এইচজিআরটিসির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের আগ্রহ জানান।