ময়মনসিংহ কৃষি অফিসে ছয় উপ-পরিচালকের নথিপত্র গায়েব

ছবি: সংগৃহীত

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের ছয় উপ-পরিচালকের নথিপত্রের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে যোগদান ও বদলির তারিখও জানে না কোনো কর্মকর্তা। এমতাবস্থায় অনার বোর্ডে যোগদান ও বদলির তারিখ লেখা হয়নি। এ নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকালে ময়মনসিংহ শহরের মহারাজা রোডে অবস্থিত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (খামারবাড়ি) ময়মনসিংহের উপ-পরিচালকের কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, এ পর্যন্ত দপ্তরটিতে ৩৫ জন উপ-পরিচালক যোগদান করে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরমধ্যে প্রথম ৭ জনের যোগদান ও বদলির তারিখ সংগ্রহ করতে পারেনি বর্তমান কর্মকর্তারা। তাদের নামের পাশে শূন্য লেখা রয়েছে। তাদের মধ্যে একই উপ-পরিচালক এ কার্যালয়ে দুই বার দায়িত্বপালন করেছেন।

ওই ছয় উপ-পরিচালক হলেন- সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া, জেড এইচ খান, আবুল মনসুর, আব্দুল কাদির ও এ এইচ এম মতিয়ুর রহমান, শেখ গোলাম মেহবুব। এরমধ্যে জেড এইচ খানের নাম দুই বার লেখা রয়েছে। এ হিসেবে তিনি ময়মনসিংহের দ্বিতীয় ও চতুর্থ উপ-পরিচালক। ৭ নম্বর উপ-পরিচালক পর্যন্ত কার্যকালের জায়গায় আটটি শূন্য লেখা রয়েছে। ৮ নম্বর উপ-পরিচালক হিসেবে শফি উদ্দিন ভূঁঞা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭৬ সালের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে কার্যালয়টিতে উপ-পরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন ড. নাছরিন আক্তার বানু। তিনি ২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর যোগদান করেন।

কার্যালয়টির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথম থেকে সাত নম্বর উপ-পরিচালক পর্যন্ত নামগুলো সংগ্রহ করতে পারলেও তাদের যোগদানের কোনো নথিপত্র পাওয়া যাচ্ছে না। এ কার্যালয়ে তাদের কোনো নথিপত্র নেই। ফলে অনার বোর্ডে তাদের কার্যকাল লেখা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে তাদের যোগদান আর বদলির তথ্য সবারই অজানা রয়েছে।

বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নাসিরাবাদ কলেজের অধ্যাপক মো. মাসুম বিল্লাহ। তিনি বলেন, অনার বোর্ড অনেকের স্মৃতি বহন করে। কারণ, কর্মকর্তারা যোগদান আর বদলির পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় আবারও যোগদান করেন। একপর্যায়ে অবসর গ্রহণ করতে হয়। অবসর সময়টুকুতে যদি ওই কার্যালয়ে এসে অন্য কর্মকর্তাদের কার্যকাল লেখা থাকলেও নিজের নামের পাশে কার্যকাল ভুল কিংবা লেখা নেই দেখেন, তাহলে নিশ্চয়ই তিনি কষ্ট পাবেন। তবে ওই কর্মকর্তা মারা গেলে তার পরিবারের কেউ স্মৃতি হিসেবে কার্যালয়টি দেখতে এসে এমন অনার বোর্ড দেখলে তারাও কষ্ট পেতে পারেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ময়মনসিংহ মহানগরের সম্পাদক আলী ইউসুফ বলেন, আমার মনে হয়, ওইসব কর্মকর্তাদের নথিপত্র ভালোভাবে ঘাটাঘাটি করা হয়নি। নিখুঁতভাবে চেষ্টা করলে নিশ্চয়ই কার্যকাল পাওয়া সম্ভব। তা না হলে, উপপরিচালকের যোগদান ও বদলির তারিখ অসম্পূর্ণ থেকেই যাবে।

এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের উপ-পরিচালক ড. নাছরিন আক্তার বানু জাগো নিউজকে বলেন, এর আগে আরেকটি অনার বোর্ড ছিল। সেখানেও এক থেকে সাত নম্বর উপ-পরিচালকের নামের পাশে কার্যকাল ছিল না। পুরাতন অনার বোর্ড অনুযায়ী বর্তমান অনার বোর্ডটি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, কার্যালয়ে ওইসব সাবেক উপ-পরিচালকদের কোনো নথি নেই। ফলে বিষয়টি আমাদের অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে আনব। নির্দেশ পেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারীরা নথিপত্র খোঁজাখুঁজি করলে কার্যকাল পাওয়া যেতে পারে। আমিও চাচ্ছি, নথিপত্র ভালোভাবে ঘাটাঘাটি হোক। কার্যকাল পেলে নতুন করে অনার বোর্ডে লিপিবদ্ধ করা হবে।