রাত পেরিয়ে সকালেও যমুনার সামনে আন্দোলন
রাতের আঁধার পেরিয়ে সকাল হয়েছে, তবে এখনো চলছে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত ও দলটি নিষিদ্ধের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন।
তবে গভীর রাত পর্যন্ত মানুষের ব্যাপক সমাগম ঘটলেও ভোরের আলো ফুটতেই কমতে শুরু করে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) আন্দোলন শুরুর পর থেকে শুক্রবার (৯ মে) সকাল ৬টা পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শুরুর পর থেকে দলে দলে এসে আন্দোলনে যোগ দেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় আন্দোলনে যোগ দিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষুব্ধরা। তবে ভোর ৫টার পর থেকে দল বেধে চলে যেতে থাকেন অনেকে। এরপরও একদল আন্দোলনকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যান।
এদিকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
একই সঙ্গে যমুনার সামনে আন্দোলনের মঞ্চ তৈরি করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (৮ মে) ভোর ৪টার দিকে কর্মসূচি থেকে এই ঘোষণা দেন তিনি।
পাটওয়ারী আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা সবাই এখানে বসে পড়েন। একটু পর এখানে মঞ্চ তৈরি করা হবে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমরা সবাই মঞ্চের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবো।’
এদিকে ঘোষণা মোতাবেক মঞ্চ প্রস্তুতে বাঁশ, কাঠসহ অন্যান্য সরঞ্জামও আনা হয়েছে। শুক্রবার (৯ মে) ভোর ৫টার দিকে দেখা যায়, মিন্টো রোডের পানির ফোয়ারার পাশের ফুটপাতে মঞ্চ প্রস্তুতের সরঞ্জাম রাখা হয়েছে।
এদিকে রাতভর ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জবাই কর’; ‘আমার সোনার বাংলায়, আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই’; ‘বিচার কর, করতে হবে’; ‘আওয়ামী লীগের বিচার, করতে হবে করতে হবে’; ‘ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহর নেতৃত্বে এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এ কর্মসূচি ঘিরে যমুনার সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়।
রাত ১০টায় যমুনার সামনে উপস্থিত হন হাসনাত আব্দুল্লাহ। এরপর থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিল নিয়ে সেখানে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা।
রাত পৌনে ১টার দিকে তারা মিছিল নিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ শীর্ষ নেতারা।
নাহিদ ইসলাম ছাড়াও এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, শিবিরের দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ সিবগা, আপ বাংলাদেশের আলী হাসান জুনায়েদসহ প্রমুখ উপস্থিত হয়েছেন।