যুদ্ধ পরিস্থিতিতেও ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ কিছু কাজ, জেনে রাখুন
🕌 ইসলামের যুদ্ধনীতি: শিশু, নারী, বৃদ্ধ ও নিরস্ত্রদের হত্যা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ
ধর্ম ডেস্ক:
ইসলামে যুদ্ধ শুধুমাত্র প্রতিরক্ষামূলক, ন্যায়ভিত্তিক ও নিয়ন্ত্রিত হতে পারে। রক্তপাত, অমানবিকতা কিংবা সাধারণ মানুষকে লক্ষ্যবস্তু বানানো ইসলামের যুদ্ধনীতির পরিপন্থী।
শান্তি ও সংলাপের পথ পুরোপুরি বন্ধ না হলে ইসলামে যুদ্ধের অনুমতি নেই। বরং, যুদ্ধের ক্ষেত্রেও মানবাধিকার রক্ষার অনন্য নজির স্থাপন করেছে ইসলাম।
🕊️ শান্তির পক্ষেই ইসলাম
পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে—
“যদি তারা সন্ধির প্রতি ঝোঁকে, তবে আপনিও তাতে সাড়া দিন এবং আল্লাহর ওপর ভরসা করুন।” (সুরা আনফাল: ৬১)
এই আয়াত স্পষ্টভাবে বলে দেয়, যুদ্ধ নয়, শান্তিই ইসলামের অগ্রাধিকার।
🚫 যাদের হত্যা নিষিদ্ধ
রাসুলুল্লাহ (সা.) অত্যন্ত স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, যুদ্ধক্ষেত্রেও কিছু মানুষকে হত্যা করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
তারা হলেন—
-
শিশু ও কিশোর
-
নারী
-
অতি বৃদ্ধ
-
ধর্মগুরু ও উপাসনালয়ে অবস্থানকারী সাধক
-
আশ্রয়প্রাপ্ত শত্রু
-
যুদ্ধবন্দি
আবু দাউদ শরিফে বর্ণিত হয়েছে—
“তোমরা যুদ্ধের সময় অতি বৃদ্ধ, শিশু ও নারীদের হত্যা করবে না।” (সুনানে আবু দাউদ: ২৬১৪)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন—
“আশ্রয় দেওয়ার পর যদি কেউ কাউকে হত্যা করে, কেয়ামতের দিন সে বিশ্বাসঘাতকতার পতাকা বহন করবে।” (সুনানে ইবনে মাজাহ: ২৬৮৮)
🔐 বন্দিদের সম্মান ও মানবিকতা
ইসলাম বন্দিদের প্রতি সম্মানজনক আচরণের নির্দেশ দেয়। পবিত্র কুরআনে এসেছে—
“তারা নিজেদের প্রিয় আহার থেকেও অভাবী, এতিম ও বন্দিকে দান করে।” (সুরা দাহর: ৮)
❌ ধ্বংসযজ্ঞের অনুমতি নেই
যুদ্ধের সময় নির্দিষ্ট শত্রুবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বাইরে গিয়ে সম্পদহানি, গাছপালা ধ্বংস, পশুহত্যা, ঘরবাড়ি জ্বালানো— এসবের কোনো অনুমতি ইসলাম দেয় না।
সুনানুল কুবরা গ্রন্থে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন—
“ফলদ বৃক্ষ ধ্বংস করো না, পশু হত্যা করো না, প্রতারণা করো না, ধ্বংসাত্মক আচরণ করো না।” (হাদিস: ১৭৯০৪)
🛐 ইসলাম ন্যায় ও মানবিকতার ধর্ম
ইসলাম যুদ্ধকেও ন্যায়নীতি ও মানবতার সীমার মধ্যে আবদ্ধ রেখেছে। নিরপরাধ মানুষের জান-মাল ও সম্মান রক্ষা ইসলামের মৌলিক শিক্ষা। এমনকি যুদ্ধক্ষেত্রেও আবেগে ভেসে গিয়ে নিষিদ্ধ কাজ করতে কড়া নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।