মৎস্য বিজ্ঞানীদের সাফল্য, কাপ্তাই লেকে কার্পের পঞ্চম প্রজননক্ষেত্র শনাক্ত

কাপ্তাই লেকে কার্পজাতীয় মাছের পঞ্চম প্রজননক্ষেত্রের সন্ধান

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) কাপ্তাই লেকে কার্পজাতীয় মাছের একটি নতুন প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্রের সন্ধান পেয়েছে। রাঙামাটির লংগদু উপজেলার কাসালং চ্যানেলের মালাদ্বীপ মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় এই প্রজননক্ষেত্রটি চিহ্নিত হয়েছে। এটি লেকে এ ধরনের মাছের পঞ্চম প্রজননক্ষেত্র।

এই গবেষণায় অংশ নেন বিএফআরআই-এর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক হায়দার ও বি. এম. শাহিনুর রহমান এবং বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. খালেদ রহমান ও মো. লিপন মিয়া।

এর আগে কাপ্তাই লেকে কার্পজাতীয় মাছের চারটি প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র চিহ্নিত হয়েছিল। সেগুলো হলো:

  1. কাসালং চ্যানেলের মাইনীমুখ মাস্তানের টিলা সংলগ্ন এলাকা,

  2. কর্ণফুলী চ্যানেলের জগন্নাথছড়ি এলাকা,

  3. চেংগী চ্যানেলের নানিয়ারচর এলাকা,

  4. রীংকন চ্যানেলের বিলাইছড়ি এলাকা।

বিএফআরআই-এর রাঙামাটিস্থ নদী উপকেন্দ্র থেকে পরিচালিত গবেষণায় বলা হয়েছে, কাপ্তাই লেকে কার্পজাতীয় মাছ সাধারণত বর্ষাকালে—বিশেষ করে জুন ও জুলাই মাসে—প্রজনন করে থাকে। এ সময় পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট প্রবল স্রোত, পানির ঘূর্ণন, ঝড়ো হাওয়া এবং বজ্রসহ ভারী বৃষ্টিপাত মাছের প্রজননের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে।

তবে গবেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সময়মতো বৃষ্টিপাত না হওয়া, পলিমাটি জমে গভীরতা কমে যাওয়া এবং প্রজনন অভিপ্রয়াণ পথ সংকীর্ণ হয়ে আসায় এসব প্রজননক্ষেত্র হুমকির মুখে পড়ছে। ফলে কার্পজাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন প্রক্রিয়া দিন দিন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

বিএফআরআই-এর গবেষণা কাপ্তাই লেকে মাছের উৎপাদন, সংরক্ষণ এবং মৎস্যচাষ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এই নতুন প্রজননক্ষেত্র চিহ্নিত হওয়ায় কাপ্তাই হ্রদের জীববৈচিত্র্য ও কার্পজাতীয় মাছের প্রাকৃতিক পুনর্জন্মে আশার আলো দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।