ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত ময়মনসিংহের ইয়াসিন
বাবার স্বপ্ন ছিলো ছেলে হবে সেনা সদস্য, কাজ করবে দেশের জন্য। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ না হওয়ায় জীবিকার তাগিদে পারি জমিয়েছিলেন রাশিয়ায়। সেখানেই তার সুযোগ মেলে রাশিয়ান সেনাবাহিনীর হয়ে চুক্তিভিত্তিক ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার। এ পর্যন্ত গল্পটা ভালোই ছিলো স্বপ্নও ধরা দিয়েছিলো ময়মনসিংহের ইয়াসিন মিয়া শেখের। কিন্তু তা আর দীর্ঘস্থায়ী হয়নি, গত ২৭ মার্চ ইউক্রেনের মিসাইল হামলায় প্রাণ হারান এই যুবক।
ইউক্রেনের মিসাইল হামলায় নিহত ইয়াসিন মিয়ার বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলার মরিচালি গ্রামে। তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, ইয়াসিনের বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলে হবে সেনা সদস্য। তবে দেশে সেই স্বপ্ন পূরণ না হওয়ায় দরিদ্র পরিবারে সচ্ছলতা আনতেই ভালো বেতনে একটি কোম্পানিতে চাকরি করতে গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। মস্কো থেকে প্রায় ১১ হাজার কিলোমিটার দূরের ওই কোম্পানিতে তিন মাস চাকরির পর বাবার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ পেয়ে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়ে যোগ দেন ইউক্রেন যুদ্ধে।
কিন্তু, ঈদুল ফিতরের পরদিন গত মঙ্গলবার বিকেলে ইয়াসিনের এক সহযোদ্ধা তার মৃত্যুর খবর জানায় পরিবারকে। এ ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে ইয়াসিনের পরিবারসহ পুরো এলাকায়। ছেলের ছবি হাতে নিয়ে মায়ের বিলাপ থামছেই না, বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন ফিরোজা খাতুন। ছোট ভাইকে হারিয়ে পাগলপ্রায় বড় ভাই রুহুল আমিন শেখও। নিহত ইয়াসিনের মরদেহ ফিরে পেতে ইতিমধ্যে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পরিবারের সদস্যরা।
নিহত যুবকের পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাশিয়ায় যাওয়ার জন্য ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে রাশিয়ান ভাষা শিখে এক বন্ধুর সহায়তার ইয়াসিন সেদেশের একটি কোম্পানিতে ভালো চাকরি পায়। সবই ঠিকটাক মতো চলছিল। কিন্তু, পরে সেখান থেকে কীভাবে রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে যোগ দেয় সে তা কেউ জানে না।