টক অব দ্য সচিবালয় প্রশাসনে আতঙ্ক, উদ্বিগ্ন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা!
গেল বছর, জুলাই গণহত্যায় নরসিংদীতে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়ায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বাণ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক যা উঠে এসেছে দেশের প্রথম সারির কয়েকটি গণমাধ্যমে।
গণমাধ্যমের তথ্যে উঠে আসছে, বিশেষ করে মাঠ প্রশাসনে কর্মরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। তাঁদের দাবি, তৎকালীন সরকারের শীর্ষ মহলের নির্দেশে কোনো নিয়ম-নীতির ধার ধারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।
গুলি করার পর পুলিশের পক্ষ থেকে চাপ দিয়ে এমসিসিতে সই নেওয়া হতো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছ থেকে। মাঠ প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তাদের নির্দেশে তাঁরা সই দিতে বাধ্য হতেন। তবে বিষয়টি নিয়ে নাম প্রকাশ করে কেউই কথা বলতে রাজি হননি।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই নরসিংদীতে পুলিশের গুলিতে শহীদ হয় নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহমিদ ভুঁইয়া।
পুলিশকে গুলির নির্দেশ দেওয়ার দায়ে গত ১৫ এপ্রিল নরসিংদীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বাণ চৌধুরী এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হন। প্রসিকিউশনের আবেদনের শুনানির পর সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেপ্তারের ঘটনা বুধবার ছিল ‘টক অব দ্য সচিবালয়’। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের বিভিন্ন ব্যাচের কর্মকর্তাদের অনেকে কালের কণ্ঠকে ফোন করে নিজেদের আতঙ্কের কথা জানান। তাঁদের দাবি, পুলিশের দাবির মুখে মাঠ প্রশাসনের নবীন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে না থেকেও নির্দেশদাতা হিসেবে এমসিসিতে সই দিতে বাধ্য হন। বিষয়টি নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করে কথা বলতে রাজি হননি। মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অনেকে টেলিফোন করে এ বিষয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তাও।
তাঁরা বলেছেন, বিশেষ করে বিসিএস ৩৩ থেকে ৪৩তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্যেই ক্ষোভ, হতাশা ও আতঙ্ক বেশি।