অপারেশন ডেভিলহান্ট : পঞ্চগড়ে মোট গ্রেপ্তার ৭৭, অধিকাংশই চুনোপুঁটি
সারাদেশের ন্যায় পঞ্চগড়েও পরিচালিত হচ্ছে অপারেশন ডেভিলহান্ট অভিযান। তবে গ্রেপ্তার অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে। যেন অনেকটা দায়সারাভাবেই চলছে এ অভিযান। ধরাছোঁয়ার বাইরে চিহ্নিতরা।
গত ৮ ফেব্রুয়ারী শুরু হওয়া এই অভিযানের আড়াই মাস অতিবাহিত হলেও এ জেলায় গ্রেপ্তার সংখ্যা একেবারেই কম। এদের মধ্যে আবার অধিকাংশই চুনোপুঁটি বলছেন স্থানীয়রা।
জেলা পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই অভিযানে গ্রেপ্তারের মোট সংখ্যা ছিলো ৭৭ জন। এই সংখ্যা জেলার ৫ থানা মিলিয়ে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ওয়ার্ড পর্যায়ের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী। কিছু সংখ্যক রয়েছে ইউনিয়ন পর্যায়েরও। তবে পতিত আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের প্রভাবশালীদের সংখ্যা নেই বললেই চলে।
এদিকে, অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চিহ্নিত আওয়ামী লীগ ও ফ্যাসিস্টের দোসরদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রুজু হয়। এসব মামলার আসামীদের গ্রেপ্তারেও পুলিশের ওপর অসন্তোষ স্বয়ং মামলার বাদী। অনেক আসামী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও ধরা হচ্ছেনা। পলাতকদের খুঁজে বের করতেও জোড়ালো ভূমিকা নেই- অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে।
জেলা শহরের পুরাতন পঞ্চগড় এলাকার বাসিন্দা বিএনপি নেতা আব্দুল বাতেন। গত বছরের ৬ আগষ্ট সদর থানায় ১১৪ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন তিনি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত বছরের ১৯ জুলাই জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ তোলা হয় মামলায়। মামলা দায়েরের ৮ মাস অতিবাহিত হলেও আসামী গ্রেপ্তারে পুলিশের ঢিলেমির অভিযোগ তুলেন তিনি।
আব্দুল বাতেন বলেন, পুলিশের ভূমিকা সন্তোষজনক নয়। আসামী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদেরকে ধরা হচ্ছেনা। পুলিশের তৎপরতা বৃদ্ধির দাবি করেন তিনি।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী বলেন, এখনো বড় বড় ডেভিলরা ধরা পড়েনি। বিগত দিনে গায়েবী মামলায় পুলিশ বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে দমনপীড়ন করেছে। আমি নিজেও মিথ্যা মামলায় টানা ৫৩ দিন কারাগারে ছিলাম। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ নিজে বাদী হয়ে মামলা করেছে। কিন্তু অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে পুলিশের ভূমিকা দেখে অবাক হই। অপারেশন ডেভিলহান্ট শুরু হওয়ার এতদিনেও জেলার গ্রেপ্তার সংখ্য হতাশাজনক। ফ্যাসিস্টের দোসররা এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে এটা আমাদের জন্য উদ্বেগের।
তিনি বলেন, পতিত আওয়ামী লীগের আমলে ক্ষমতাকে ব্যবহার করে যারা লুটপাট করেছে, অপকর্ম করেছে, যারা বড়বড় পদধারী ছিলো- তারা কেউ এখনো ধরা পড়েনি। তাদের অনেকেই জুলাই আন্দোলনে ছাত্রজনতার উপর হামলার উস্কানিদাতা ছিলেন, সরাসরি হামলায় জড়িত ছিলেন। তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, অপারেশন ডেভিলহান্টে আমাদের অভিযান চলছে। আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।