সৌরচালিত ভ্রাম্যমাণ সেচপাম্প যেভাবে বদলে দিচ্ছে কৃষি
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ এলাকার কৃষকদের জন্য নতুন এক প্রযুক্তি উদ্ধাবন করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক। শুষ্ক মৌসুমে জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য সোলার প্যানেলচালিত ভ্রাম্যমাণ সেচপাম্প তৈরি করে সংস্থাটি। এটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, সহজেই যে কোনো স্থানে বসিয়ে পুকুর, খাল কিংবা জলাধার থেকে সোলারচালিত পাম্পের মাধ্যমে পানি তুলে জমিতে সেচ দেওয়া যাবে।
এরইমধ্যে স্থানীয় কৃষকদের কাছে এটি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিশেষ এই সেচপাম্প তৈরি করতে আকারভেদে ৭ থকে ৯ লাখ টাকা খরচ হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সোলারচালিত ভ্রাম্যমাণ সেচপাম্পের চালক মো .সজিব বলেন, ‘আমি এখন প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পাম্প চালাই। যারা পানি নেন, তারা খুশি। তাদের খরচ কমেছে, আমারও কিছু আয় হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যখন সেচ দেওয়ার কাজ থাকে না, তখন এই অটোরিকশায় করেই যাত্রী এবং বিভিন্ন কৃষিপণ্য পরিবহন করি। সিজনের শুরুতে সার-বীজ পরিবহন করতে কৃষকরা আমাকেই খবর দেন।’
স্থানীয় কৃষক নিতাই চন্দ্র বলেন, ‘জমিতে সেচ দেওয়ার প্রয়োজন হলে সজিবকে (সেচপাম্পের চালক) ফোন দিলই সে তার পাম্প নিয়ে পৌঁছে যায়। খালের পাড়ে কিংবা পুকর পাড়ে মেশিন বসিয়ে দিলে সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে পানি উঠতে থাকে। এখানে যেমন ব্যয় কম হয়, তেমনি পরিবহনসহ অন্যান্য বিষয়ে ঝামেলা নেই। এটি আমাদের জন্য বেশ উপকারী একটি প্রযুক্তি।’
ব্র্যাকের ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রোগ্রামের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার তৌসিফ আহমেদ কুরাইশি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষকরা নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছেন। এই সৌরচালিত সেচ প্রযুক্তি শুধু তাদের কৃষিকাজ সহজ করছে না বরং খরচ কমিয়ে আয়ের নতুন পথ তৈরি করছে। এটি পরিবেশবান্ধব, টেকসই এবং ভবিষ্যতের কৃষির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উদ্ভাবন। আমরা ধাপে ধাপে এটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিস্তৃত করার পরিকল্পনা নিয়েছি।’