"পাঁচ দিন ধরে তালাবদ্ধ, মসজিদ ঘিরে রহস্য"
পীরগাছায় জামে মসজিদে তালা, পাঁচদিন ধরে বন্ধ নামাজ আদায়
রংপুর প্রতিনিধি:
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কৈকুড়ী ইউনিয়নের উত্তর কৈকুড়ী কুর্শাপাড়া গ্রামের একমাত্র জামে মসজিদে পাঁচদিন ধরে ঝুলছে তালা। এর ফলে মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারছেন না স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। ঘটনায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মসজিদ পরিচালনা কমিটি গঠনে দ্বন্দ্বের জেরে গত ২ মে (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর মসজিদের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন কমিটির সভাপতি জিল্লুর রহমান (৬৫)। তিনি মসজিদের মোতওয়াল্লি, সভাপতি, মুয়াজ্জিন ও ক্যাশিয়ার পদে রয়েছেন। সেই থেকেই মসজিদে আযান ও জামাতে নামাজ বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, এ অবস্থায় যেকোনো সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে।
ঘটনার বিষয়ে ফিরোজ মিয়া নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, প্রায় ৬০ বছর আগে মরহুম ইয়াসিন ব্যাপারী এলাকাবাসীর জন্য একটি ওয়াক্তিয়া নামাজঘর নির্মাণ করেন, যা পরবর্তীতে জামে মসজিদে রূপ নেয়। মসজিদ ঘেঁষা একটি ঈদগাহ মাঠ নির্মাণের উদ্দেশ্যে ৯ শতক জমি ওয়াকফ করা হয় এবং মুসল্লিদের সহযোগিতায় নির্মিত মসজিদে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত ও জুমার নামাজ আদায় হতো।
ফিরোজ মিয়ার অভিযোগ, “জিল্লুর রহমান মসজিদকে ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো ব্যবহার করছেন। তিনি ইচ্ছামতো মুয়াজ্জিন নিয়োগ দিয়ে মসজিদের মূল ফটক পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে গ্রামের মুসল্লিরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।”
অন্যদিকে, জিল্লুর রহমান দাবি করেন, “আমার পরিবারই মসজিদের জমি ও অবকাঠামো দান করেছে। আমরাই দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ বিল দিয়ে আসছি। প্রতিবেশী ফিরোজ মিয়া ও তার পরিবার মসজিদের সঙ্গে জড়িত কেউ নন। এখন তালা দেওয়ার পর তারা মসজিদের বিষয়ে কথা বলছেন।”
এ বিষয়ে কৈকুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আলম জানান, “ঘটনার দিন আমি উভয় পক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম। সেখানে তর্কাতর্কি ও উত্তেজনার একপর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি ঠেকাতেই সাময়িকভাবে মসজিদে তালা দেওয়া হয়। প্রশাসন চাইলে তালা খুলে দিতে পারে।”
এ বিষয়ে রংপুরের পুলিশ সুপার আবু সায়েম বলেন, “এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং নামাজ চালু করার জন্য তালা খুলে দেওয়া হবে।”