অপপ্রচারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন উমামা ফাতেমা

সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে চলমান অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। এক লিখিত বিবৃতিতে তিনি জানান, তাকে ‘ধর্মবিদ্বেষী’ এবং ‘পুরুষবিদ্বেষী’ হিসেবে চিত্রিত করার জন্য তার বক্তব্যের কিছু অংশ পরিকল্পিতভাবে বিকৃত করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করা হচ্ছে।

উমামা বলেন, “এখন নতুন করে আমার বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে যে, আমি সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার সময় আলেম-ওলামাকে গালমন্দ করেছি। কিন্তু এই ভিডিওটি ৯ মার্চের, যখন আমরা বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের ছাত্র-শিক্ষকরা কার্জন হলের সামনে দোয়েল চত্বরে মানববন্ধন করেছি। আমাদের প্রতিবাদের বিষয় ছিল—অর্ণবের শাস্তির দাবি, শাহবাগ থানা ঘেরাও এবং এক জুনিয়র ছাত্রীকে মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য করার ঘটনার প্রতিবাদ।”

তিনি অভিযোগ করেন যে, শাহবাগ থানা ঘেরাওকারীরা এখানেই থেমে থাকেনি, বরং তার জুনিয়রের ব্যক্তিগত তথ্য—ফোন নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, বাসার ঠিকানা, এমনকি মা-বাবার নাম পর্যন্ত অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে ফোন ও ফেসবুকে হুমকি ও অশালীন বার্তা পাঠানো হয়েছে।

উমামা আরও বলেন, “ঘটনার পর আমরা রমনা জোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের জানালে তারা জানান, শাহবাগ ঘেরাওকারীদের মধ্যে নিষিদ্ধ সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য রয়েছে। কিন্তু এই গুরুতর অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য কেউ শাস্তি পায়নি, বরং আমার জুনিয়রকে মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছে।”

তিনি উল্লেখ করেন, “ঘটনার পর বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করেছেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ বিভাগ থেকেও লিখিত বিবৃতি দিয়ে বিচার দাবি করা হয়েছে।” আলেম-ওলামাদের প্রতি গালিগালাজের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “যারা শাহবাগ ঘেরাওকারীদের আলেম-ওলামা রূপে উপস্থাপন করছে, তারা প্রকৃতপক্ষে ইসলামের অপমান করছে। অনেকেই নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য এবং তারা হেনস্থাকারী অর্ণবকে কোর্টে পাগড়ি, গাঁদা ফুলের মালা ও কোরআন শরীফ দিয়ে বরণ করেছিল, যা আসলে কোরআনেরই অবমাননা।”

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ব্যক্তি, যিনি ইন্টারনাল হ্যারেসমেন্টের ঘটনা জাতীয় ইস্যু বানিয়েছেন, তার বক্তব্যের কিছু অংশ কেটে বিভ্রান্তিকর ক্যাপশনসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে। Jamuna Television-এর একটি ভিডিওতেও তার বক্তব্য বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

শেষে, উমামা ফাতেমা হেফাজতে ইসলাম সম্প্রতি নারীবিরোধী বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করার বিষয়টিকে রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “শাপলা-শাহবাগের বাইনারি বিভাজনে না গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে মতানৈক্য সমাধানের সময় এসেছে।” এছাড়াও, তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, হেফাজতে ইসলাম ভবিষ্যতে নারী অধিকারের প্রশ্নকে গুরুত্ব দিয়ে দেখবে এবং তাদের ঘোষিত ১২ দফার মধ্যে থাকা রাজনৈতিক দাবিগুলো—যেমন আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গ—জাতীয় ঐক্যের দিকে সহায়ক হবে।