"মির্জা ফখরুলের শঙ্কা, স্বল্প সময়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার কঠিন"
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার অদূর ভবিষ্যতে সম্ভব কি না, তা অনিশ্চিত: মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপি কেবল ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে—এমন মন্তব্যের জবাবে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, "হ্যাঁ, আমরা ক্ষমতা চাই, কিন্তু তা জনগণের ভোটের মাধ্যমে। আমাদের গঠনতন্ত্রেই বলা আছে—গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে চাই আমরা।"
বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকেলে সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে বিএনপির সাবেক নেতা এ জে মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
"দেশ এখন ভঙ্গুর অবস্থানে"
বক্তব্যে ফখরুল বলেন, “সবার মধ্যে একটা শান্তিভাব দেখা যাচ্ছে, অনেকে মনে করছেন পরিস্থিতি ঠিক হয়ে গেছে। কিন্তু রাজনীতিবিদ হিসেবে আমি মনে করি, আমরা এখন সবচেয়ে ভঙ্গুর অবস্থানে রয়েছি। আদৌ অল্প সময়ের মধ্যে গণতন্ত্র ফিরে পাওয়া যাবে কি না, তা অনিশ্চিত।”
তিনি জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই করছে। কিন্তু এখনো সেই লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। ফখরুল বলেন, “প্রতিদিন নতুন নতুন তত্ত্ব হাজির হচ্ছে, সময়ক্ষেপণ হচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। কেউ কেউ ভাবছেন, আমরা সংস্কারবিরোধী; অথচ আমরাই সংস্কারের পথিকৃত।”
“নির্বাচিত সরকার ছাড়া কোনো সমাধান সম্ভব নয়”
বিএনপি কেন নির্বাচন চায়, সে প্রশ্নের উত্তরে ফখরুল বলেন, “আমলা-নির্ভর অনির্বাচিত সরকারের অধীনে জনগণের কোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। আজও প্রশাসনে ৯০ শতাংশ আমলা ফ্যাসিস্টদের দোসর। আমরা এমন একটি সরকার চাই, যেটি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে এবং বাস্তবসম্মত সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে।”
তিনি আরও বলেন, “সংস্কার করতে যদি ১০ বছর সময় লাগে, তাহলে কি ১০ বছর পরে নির্বাচন হবে? এতদিন ফ্যাসিস্ট আমলাদের সঙ্গে সরকার চলতে পারে না।”
অর্থনীতির দুরবস্থার কথা তুলে ধরেন
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলো বন্ধ হচ্ছে। বিদেশিরা বলছে, তারা নির্বাচিত সরকার ছাড়া বিনিয়োগ করবে না। মুদ্রাস্ফীতি কমছে না। সরকার অর্থনীতির জন্য বাস্তবিক কিছু করছে না।”
করিডোর ইস্যুতে হুঁশিয়ারি
বক্তব্যের শেষদিকে করিডোর ইস্যুতে সতর্কতা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “যদি করিডোর দেওয়ার প্রয়োজন হয়, তা অবশ্যই জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে দেওয়া উচিত। কোনও গোপন সিদ্ধান্ত জাতির জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে না। আমরা মানবতার পক্ষে, তবে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ মেনে নেওয়া যাবে না।”
তিনি আরও বলেন, “বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য চায়। তবে এমন কিছু করা যাবে না, যাতে জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দেশের স্বার্থের পরিপন্থী কোনো সিদ্ধান্ত হলে আমরা বাধা হবো।”