ঋণমুক্তির পথে দেশের জ্বালানি খাত: অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পেট্রোবাংলা
দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত, যা দীর্ঘদিন ধরে ঋণের চাপে জর্জরিত ছিল, ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধারের পথে অগ্রসর হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের বিশেষ উদ্যোগের ফলে পেট্রোবাংলা তাদের সমস্ত মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ পরিশোধ করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এখন থেকে নির্ধারিত সময়েই সব বিল পরিশোধ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশ্বাস দিয়েছেন।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, আগের আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে পেট্রোবাংলাসহ জ্বালানি খাত বিপুল ঋণের বোঝায় পড়ে। আন্তর্জাতিক জ্বালানি কোম্পানি এবং এলএনজি সরবরাহকারীদের কাছে বাংলাদেশের দেনার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় দেশের ক্রেডিট রেটিং এবং আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
তবে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর জ্বালানি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এর ফলস্বরূপ বড় অঙ্কের বকেয়া ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব হয়।
পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের আগস্টে সংস্থাটির মোট ঋণের পরিমাণ ছিল প্রায় ৭৩৭.৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা টাকায় প্রায় ৮৭০২ কোটি। সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, গত নয় মাসে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি (আইওসি), এলএনজি সরবরাহকারী দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল (এফএসআরইউ ও আইটিএফসি) এবং অন্যান্য খাতে সুদসহ মোট ৩৭৩৯.৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে।
অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিতরণ খাতে ভর্তুকি বরাদ্দ বাড়ানোয় বিতরণ কোম্পানিগুলো উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বিল পরিশোধে সক্ষম হয়েছে। একইসাথে, গ্যাস গ্রাহকদের নিয়মিত বিল পরিশোধ এবং ব্যাংকিং খাতে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির ফলে একটি স্থিতিশীল কাঠামো তৈরি হয়েছে।
পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা জানান, এখন থেকে যে কোনো পাওনা নির্ধারিত তারিখেই সিঙ্গেল ট্রানজেকশনে পরিশোধ করা হবে। এছাড়া এলএনজি আমদানির জন্য স্ট্যান্ডবাই এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) চালু রাখা, এবং লং টার্ম ও স্পট মার্কেট আমদানির জন্য ভালো রেটিং সম্পন্ন ব্যাংকের সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব পদক্ষেপ দেশের সামগ্রিক ক্রেডিট রেটিং উন্নত করতে সহায়ক হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।