খাল থেকে উদ্ধার মরদেহকে ছেলের বলে দাফন, মোবাইল চালু হতেই মিলল জীবিত রহিম
চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার দেওয়ান বাজার রুমঘাটা এলাকার একটি খাল থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহকে নিজের নিখোঁজ ছেলে মনে করে দাফন করেছিলেন ভোলার একজন ব্যক্তি। তবে পরবর্তীতে সেই নিখোঁজ ছেলের মোবাইল ফোন চালু হলে রহস্যের উদঘাটন হয়। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্তের মাধ্যমে জানতে পারে, আবদুর রহিম নামে যাকে দাফন করা হয়েছিল, তিনি আসলে জীবিত এবং আত্মগোপনে ছিলেন।
তবে, দাফন করা ব্যক্তির প্রকৃত পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিট জানায়, মরদেহের ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণ করা হয়েছে। কেউ নিখোঁজ স্বজন বলে দাবি করলে ডিএনএ মিলিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করা হবে।
গত ৩ মে, রুমঘাটা এলাকার খাল থেকে অজ্ঞাতপরিচয় ওই মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পরদিন ভোলা থেকে আসা উবাইদুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি সেটিকে তাঁর নিখোঁজ ছেলে আবদুর রহিমের মরদেহ বলে শনাক্ত করেন। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর মরদেহটি ভোলায় নিয়ে গিয়ে দাফন করা হয়।
কয়েকদিন পর রহিমের মোবাইল ফোন হঠাৎ চালু হলে পিবিআই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। প্রযুক্তির সহায়তায় রহিমকে জীবিত অবস্থায় খুঁজে পায় এবং হেফাজতে নেয়। একই সময়ে তার বাবা উবাইদুল্লাহকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
পিবিআই সূত্রে জানা যায়, আবদুর রহিম এক প্রতারণার ফাঁদে পড়েছিলেন। একটি মোবাইল গেমসে চার লাখ টাকা ও একটি আইফোন জেতার আশায় তিনি প্রতারকদের হাতে ৪০ হাজার টাকা দেন। পরবর্তীতে ঋণে জর্জরিত হয়ে আত্মগোপনে চলে যান এবং মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখেন। এই সময়েই খাল থেকে মরদেহ উদ্ধারের পর তার পরিবার সেটিকে রহিমের দেহ বলে ভুল করে।
রহিমের বাবা উবাইদুল্লাহ পিবিআইকে জানান, "মরদেহটি দেখে আমার ছেলের মতো মনে হয়েছিল। নিখোঁজ থাকায় এমনটা ঘটেছে। আমাদের কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না।"
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা বলেন, "রহিমের ফোন চালু হওয়ার পর আমরা বিষয়টি যাচাই করি। পরে তাকে জীবিত পাওয়া যায়। উদ্ধার হওয়া মরদেহের ডিএনএ যাদের সংগ্রহ করা হয়েছে, তাদের কারও সঙ্গে মিল পাওয়া যায়নি। অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহের ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণ করা হয়েছে। যদি কেউ নিখোঁজ স্বজন বলে দাবি করেন, তাহলে ডিএনএ মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"