সিলেটে পাথর উত্তোলন: আইনি লড়াইয়ের পরও চলছে লুটপাট
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অভিযোগ করেছেন যে, সিলেটে পাথর খননকারীদের অপতৎপরতা অব্যাহত রয়েছে, অথচ স্থানীয় জনগণ নীরব ভূমিকা পালন করছে। তিনি উল্লেখ করেন, অতীতে মানববন্ধন ও আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে চার বছর ধরে পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখা সম্ভব হয়েছিল, কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে সেখানে পুনরায় লুটপাট শুরু হয়েছে।
শনিবার রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে জালালাবাদ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে "Flood Hazard in Sylhet Region: Problems and Way Forward" শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জলবায়ু পরিবর্তন ও বন্যা ঝুঁকি
রিজওয়ানা হাসান আরও জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে প্রায় ৫২ মিলিয়ন মানুষ বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্যমতে, বন্যা ঝুঁকির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে ১০তম এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকির ক্ষেত্রে ৭তম স্থানে রয়েছে।
তিনি হাওরের ওপর অল ওয়েদার সড়ক নির্মাণ প্রকৃতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলেও মন্তব্য করেন। জলবায়ু পূর্বাভাস পেতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন, যা আগাম প্রস্তুতি নিতে সহায়ক হবে।
সেমিনারের অন্যান্য বক্তাদের মতামত
সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা সিলেট অঞ্চলের নদী ও খাল দখলমুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। সঠিক ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে পানি সংরক্ষণ করলে শুষ্ক মৌসুমে কৃষিকাজে পানি সরবরাহ সহজ হবে বলে মত প্রকাশ করেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, পরিকল্পনার অভাব ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে অনেক সরকারি প্রকল্প ব্যাহত হয়। সদিচ্ছা থাকলেও কারিগরি ত্রুটি ও জ্ঞানের অভাবে প্রকল্পগুলো সফল হয় না।
দৈনিক মানবজমিন-এর প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বের অভাবকে দায়ী করেন। উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারের বাজেট ও একনেক-এর সিদ্ধান্তে নজর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
গবেষণাপত্র উপস্থাপন
সেমিনারে "বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে বন্যার ঝুঁকি: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ওপর গবেষণা" শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও মারারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রব এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মার্জিয়া আক্তার অপু।