শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার প্রতিবেদন দাখিল আজ

সংগৃহীত

জুলাই গণহত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম শেষ করেছে সংশ্লিষ্ট তদন্ত সংস্থা। আগামী সোমবার (১২ মে) এই তদন্ত প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে জমা দেওয়া হবে। এ মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনও আসামির তালিকায় রয়েছেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার নির্দেশ প্রদানের প্রমাণ পাওয়া গেছে। রোববার রাতে প্রসিকিউশন সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

 

অন্যদিকে, রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আজ সোমবার সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হকসহ মোট চারজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হচ্ছে। বাকি দুই আসামি হলেন—অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান ও পুলিশের সাবেক ডিআইজি মোল্যা নজরুল ইসলাম। গত ১২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল তাদের হাজির করার নির্দেশ দেয়।

 

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সোমবার দুপুর ১টায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গণমাধ্যমকে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানান প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম। এটি হবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যা সংশ্লিষ্ট প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন।

 

তদন্তে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণ রয়েছে। তিনি কখনো সরাসরি, কখনো টেলিফোন বা অন্যান্য মাধ্যমে গুলির নির্দেশ দিয়েছেন এবং তা বাস্তবায়ন হয়েছে। এমনকি হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর নির্দেশও ছিল তার। তদন্তকারীরা তাকে এই হত্যাযজ্ঞের মূল পরিকল্পনাকারী বা 'মাস্টারমাইন্ড' হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং আইনগতভাবে 'সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি'-র দায় তার ওপর বর্তায়।

 

তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটি হত্যা ও গুম সংক্রান্ত মামলাসহ মোট দুটি মামলার তদন্ত এখনো চলমান। এ মামলাগুলোর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, যাঁরা বর্তমানে পলাতক।

 

শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হামলার মামলা:

 

২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বর এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের উপর চালানো হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি (মিস কেস) মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ মোট ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজন ইতোমধ্যে অন্যান্য মামলায় গ্রেপ্তার অবস্থায় আছেন।

 

বাকি পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, যারা হলেন—শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, ইমরান এইচ সরকার, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার এবং বেনজীর আহমেদ। গ্রেপ্তার থাকা চারজন আসামি হলেন—শামসুল হক টুকু, এ কে এম শহিদুল হক, জিয়াউল আহসান এবং মোল্যা নজরুল ইসলাম।