জুনে নয়, এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের প্রত্যাশা জামায়াত আমিরের

ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আমির ডা. শফিকুর রহমান আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৫ সালের জুনে নয়, ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, একটি সুষ্ঠু ও বস্তুনিষ্ঠ নির্বাচনের জন্য জাতি অপেক্ষা করছে। এছাড়া, তিনি স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে জাতীয় নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা প্রমাণে এটি 'অ্যাসিড টেস্ট' হিসেবে বিবেচনা করার আহ্বান জানান

শনিবার সকালে রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে জামায়াতের জেলা ও মহানগর আমির সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ১৪ বছর পর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা একটি মানবিক কল্যাণ রাষ্ট্রের জন্য কাজ করছি, যেখানেই ভোগান্তি সেখানেই আমরা চেষ্টা করি ছুটে যেতে। জনগণের দায়িত্ব যেমন আছে, তেমনি গণনামূলক দল হিসেবে জামায়াতের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি মনে করি। তাই আমরা চেষ্টা করি সাধ্যমতো দেশের কল্যাণে কাজ করতে।”

তিনি আরও বলেন, “২০০৯ সাল থেকেই ইসলামপন্থি মানুষের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। পিলখানায় দেশপ্রেমিক সেনাকর্মকর্তা, হেফাজতের সমাবেশে শাপলা চত্বরের গণহত্যাসহ ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে হাজার হাজার মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। সাড়ে ১৫ বছর যারা হত্যা, নির্যাতন, অর্থ পাচারসহ নানা অপকর্ম করেছে, এসবকিছুর আমরা বিচার দাবি করছি।”

নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে তিনি বলেন, “অর্থপাচারের বিচার করতে হবে। পেশিশক্তি ও কালো টাকার প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে। এই পদ্ধতিতে অনেক দেশে নির্বাচন হয়।” তিনি আরও বলেন, “আমরা শুনছি, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের সুপারিশ করা হয়েছে, যেখানে নিম্নকক্ষে বর্তমান পদ্ধতিতে এবং উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে। যদি উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়, তবে নিম্নকক্ষে কেন নয়? একটি দেশে দুটি পদ্ধতির প্রয়োজন কী?”

নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের কিছু সুপারিশ সরাসরি কোরআন ও সুন্নাহর পরিপন্থী বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই কোরআন বিরোধী কমিটিকে বাতিল করতে হবে। সরকারকে এরই মধ্যে আমরা সতর্ক করেছি। তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করি।”

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “মাঝে মাঝে সরকারের কিছু উপদেষ্টা অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ করেন। এটা আমাদের বিস্মিত করে। তাঁরা রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ থেকে তাঁদের নিবৃত থাকতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “কোনো কোনো দল তাদের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। চাঁদাবাজিসহ সামাজিক অপকর্ম থেকে বিরত না থাকলে সেসব দলের প্রতি মানুষের ঘৃণা জন্মাবে।” এ সময় তিনি জাতীয় স্বার্থে সবাইকে এক থাকার আহ্বান জানান।

দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে জামায়াতের আমির বলেন, “আমরা দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই। আমরা একটি মজলুম দল। বাংলাদেশ একটি ভুক্তভোগী দেশ।”