"যারা আমাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে, তাদের দাবি একটাই - আ.লীগ নিষিদ্ধ।"
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রধান সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাই হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংস্কার, কারণ এই দল দেশকে কসাইখানায় পরিণত করেছে।”
শনিবার (৩ মে) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলাম আয়োজিত এক মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
হাসনাত বলেন, “ড. মুহাম্মদ ইউনূস কিছুদিন আগে বলেছেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচন করবে কি না, সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমি বলতে চাই—আপনারা ভুলে যাবেন না, এই দেশের মানুষই আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল। নির্বাচন করবে কি না, সেই সিদ্ধান্তও আমরা নিয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ আর কোনো দিন বাংলাদেশে আসবে না। এ দলকে নিষিদ্ধ করাই হবে সর্ববৃহৎ সংস্কার। তারা গোটা দেশে কসাইতন্ত্র চালু করেছে। আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।”
আন্দোলন প্রসঙ্গে এনসিপি নেতা বলেন, “শেখ হাসিনার ফাঁসি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।”
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্রদের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। পরে, ৮ আগস্ট ছাত্রদের অনুরোধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
হাসনাত অভিযোগ করেন, “দুঃখজনকভাবে, আট মাস পরেও দেশের অনেক রাজনৈতিক দল ও নেতা আওয়ামী লীগকে এখনো রাজনৈতিক দল হিসেবে চিহ্নিত করে এবং তাদের নিষিদ্ধ করা নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমাদের অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলে।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ এ দেশে রাজনৈতিকভাবে ‘মৃত’—আর তাদের ‘জানাজা’ হয়েছে দিল্লিতে। শহীদদের রক্তের ওপর পা দিয়ে এ দল আর ফিরে আসতে পারবে না। এটি নিষিদ্ধ করাই দেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার।”
হেফাজতের সমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি আরও বলেন, “২০১৩ সালের ৫ মে আলেম-ওলামাদের ওপর যিনি হামলা চালিয়েছিলেন, সেই শেখ হাসিনাই আজ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।”
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে হাসনাত বলেন, “সংস্কারের নামে যেসব বিতর্কিত প্রস্তাবনা এসেছে, তা অবশ্যই বাতিল করতে হবে। আজকের সমাবেশ থেকে শহীদদের তালিকা প্রকাশ করুন এবং বিচার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ থাকুন।”
উল্লেখ্য, নারী কমিশন বাতিলসহ চার দফা দাবিতে আজ সকাল থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, যা চলবে দুপুর ১টা পর্যন্ত।