ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, “আমরা ভারতের কাছে ভিক্ষা চাই না, চাই আমাদের হিস্যার পানি। আজ না হলে কাল, আমাদের এই পাওনা আদায় করতেই হবে।” রোববার বিকেলে রংপুর নগরীর শাপলা চত্বরে তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে আয়োজিত গণপদযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, “পানি কখনো মারণাস্ত্র বা যুদ্ধের অস্ত্র হতে পারে না। কিন্তু ভারত সেই নজির গড়ে তুলেছে। এটি এক অমানবিক ও সভ্যতাবিরোধী আচরণ।” তিনি অভিযোগ করেন, “আমরা বহু আগেই পানির ন্যায্য হিস্যা পেতাম, যদি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ‘সন্ত্রাসী’ সরকার না থাকত। তারা ভারতের সামনে কখনোই দেশের স্বার্থ তুলে ধরতে পারেনি।”

বিএনপি নেতা আরও বলেন, “আমরা চাই ভারতের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান। তবে তা হতে হবে সম্মানজনক ও দেশের স্বার্থ রক্ষায় অটুট থেকে।” তিনি বলেন, “ভারতের কাছে অনেক কিছু আমাদের পাওনা আছে—মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দরসহ বিভিন্ন সুবিধা। সময় এসেছে হিসেব-নিকেশ চুকানোর।”

তিস্তা আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবীব দুলুকে উদ্দেশ করে মির্জা আব্বাস বলেন, “তুমি উত্তরবঙ্গের প্রতিবাদী মুখ, সাবধানে থাকো। ভারত কখনো প্রতিবাদী কণ্ঠকে সহ্য করে না। সুরমা নদীর বাঁধ নিয়ে কথা বলার দায়ে ইলিয়াস আলী গুম হয়েছেন—এই ইতিহাস ভুলে গেলে চলবে না।”

 

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে আয়োজিত গণপদযাত্রাটি রোববার দুপুর ১টার পর থেকেই উত্তরাঞ্চলের জেলা ও উপজেলা থেকে আগত হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে রংপুর নগরীর শাপলা চত্বরে এক বিশাল জনসমুদ্রে রূপ নেয়। "জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই" স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।

গণপদযাত্রাটি শাপলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে রংপুর জিলা স্কুল মাঠ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। এতে শিক্ষার্থী, কৃষক, শ্রমজীবী, পরিবেশকর্মী ও সাধারণ মানুষসহ প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ অংশ নেন। তারা নানা প্ল্যাকার্ড ও ব্যানারে তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান।

 

এর আগে গত ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে দুই দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সমাপনী অনুষ্ঠানে যুক্ত হন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মির্জা আব্বাস শেষপর্যন্ত ঘোষণা দেন, “তিস্তা আন্দোলন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব। পানি আমাদের অধিকার—এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না।”