ছায়া সংসদে মতিউর: কাশ্মীর কেবলই ভারত-পাক রাজনীতিবিদদের হাতিয়ার

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতি: ভূরাজনীতিতে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকার পরামর্শ গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মতিউর রহমান চৌধুরীর

 

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের জন্য সম্ভাব্য ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন সিনিয়র গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মতিউর রহমান চৌধুরী। তিনি বলেন, "আমাদের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে যেন কেউ ফায়দা লুটতে না পারে এবং আমাদের কোনো বক্তব্য কোনো পক্ষকে উস্কে না দেয়। পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে গিয়ে যেন আমরা ভূরাজনীতির খেলায় পা না দেই।"

শনিবার রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ‘ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের মূল কারণ রাজনৈতিক নয়, ঐতিহাসিক’ শীর্ষক ছায়া সংসদে এসব মন্তব্য করেন তিনি। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

মতিউর রহমান আরও বলেন, “ভারতের সঙ্গে বর্তমান সরকারের সম্পর্ক জটিল। অতীতে ভারত আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়েনি। বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের উচিত সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় বসা।”

তিনি যুদ্ধের প্রযুক্তিগত দিক উল্লেখ করে বলেন, “এই যুদ্ধের এক নতুন দিক হচ্ছে ভুয়া সংবাদ, এআই ও ড্রোনের ব্যবহার। কাশ্মীর এখন দুই দেশের রাজনীতিবিদদের দাবার গুটি। এই যুদ্ধকে হালকাভাবে দেখা যাবে না।”

অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, “কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত এবং ভারতের পাল্টা হামলায় ৩২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার অভিযোগ—দুটিই দুঃখজনক। যুদ্ধ যদি চলতে থাকে, তা বিশ্বব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করবে।”

তিনি আরও বলেন, “ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধকে মুসলিম-হিন্দু যুদ্ধ হিসেবে দেখানো বিপজ্জনক। বিশেষ করে বিজেপির ওয়াকফ সংশোধনী বিল দ্রুত নিষ্পত্তি করে ভারতীয় মুসলমানদের আস্থায় নেওয়া জরুরি।”

বাংলাদেশের সম্ভাব্য ক্ষতির কথা উল্লেখ করে কিরণ বলেন, “যুদ্ধ পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি, সাপ্লাই চেইন, পুঁজিবাজার, ফ্লাইট রুট ও পণ্যের দামে সরাসরি প্রভাব পড়বে। সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের পুশ-ইনের ঘটনাও আমাদের জন্য নতুন শঙ্কা তৈরি করছে।”

অনুষ্ঠানে ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ বিজয়ী হয়, পরাজিত হয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি। বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, এ কে এম মঈনুদ্দিন, মিজানুর রহমান ও কবি জাহানারা পারভীন। বিজয়ীদের মাঝে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়।