মাঠে নামার আগেই জোড়া বাহানা! অচেনা ধোনি, আরও অচেনা চেন্নাই, ঘরের মাঠে পঞ্জাবের কাছেও হার
বাহানা ১: ঘরের মাঠে বেশির ভাগ ম্যাচ খেলতে হয়। ঘরের মাঠের সুবিধা পাওয়া ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সেই সুবিধা নিতে পারছি না।
বাহানা ২: আমরা দলে বেশি পরিবর্তন করতে পছন্দ করি না। তবে এই মরসুমে প্রথম একাদশ বার বার পরিবর্তন করা হয়েছে। কারণটা খুব সবজ। যখন অধিকাংশ খেলোয়াড় ভাল পারফর্ম করে, তখন প্রয়োজন মতো এক বা দু’জনকে পরিবর্তন করলেই হয়। কিন্ত এই মরসুমে আমরা তা করতে পারিনি। নতুন করে নিলামের পর এটাই প্রথম মরসুম। ফলে আমাদের ভাবনায় এক রকম আছে আর হচ্ছে আর এক রকম। বুঝতে হবে কোন ব্যাটার কোথায় সবচেয়ে বেশি কার্যকর।
এ বারের আইপিএলে চেন্নাইকে দেখে মনেই হচ্ছে না, এই দল পাঁচ বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এই দলের সঙ্গে রয়েছে ধোনির মতো ক্রিকেট মস্তিষ্ক। অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের চোট পেয়ে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যাওয়া নিঃসন্দেহে চেন্নাইকে বড় ধাক্কা দিয়েছে। তবু ধোনি সেই চাপ সামলে দেবেন, সেটাই প্রত্যাশিত। না, ধোনি পারলেন না। বিশাল অভিজ্ঞতা নিয়েও দলকে দিশা দেখাতে ব্যর্থ। ক্রিকেটার হিসাবেও ধোনি এখন অতীতের ছায়া। একটা ভাল স্টাম্পিং বা ছক্কা ক্রিকেটপ্রেমীদের পুলকিত করতে পারে। ধোনিভক্তেরা উচ্ছ্বসিত হতে পারেন। তাতে ম্যাচের ফল বদলায় না।
আইপিএলে চেন্নাইকে এতটা বেহাল দেখায়নি এর আগে। শুধু চেন্নাই নয়, বেশ কয়েকটি দল ঘরের মাঠের সুবিধা না পাওয়ায় অসন্তুষ্ট। এ বার সব দলই নতুন। তাই মাঠে নামার আগেই ধোনির জোড়া বাহানা কতটা যুক্তিগ্রাহ্য তা নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই। বুধবারও সাম কারেনের ৮৮ রান ছাড়া চেন্নাইয়ের ইনিংস বেহাল। এক জনের মধ্যেও লড়াই করার মানসিকতা দেখা গেল না। বল বুঝে খেলার মানসিকতা দেখা গেল না। এটা ধোনির দল! আইপিএল চলছে এক মাসের বেশি। তারও প্রায় দেড় মাস আগে প্রস্তুতি করেছিল চেন্নাই। পেশাদার ক্রিকেটারদের জন্য এই সময় যথেষ্ট নয়?
এ বারের আইপিএলের প্রথম হ্যাটট্রিক হল চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে করলেন যুজবেন্দ্র চহল। চেন্নাইয়ের ইনিংসের ১৯তম ওভারে বল করতে এসে হ্যাটট্রিক-সহ ৪ উইকেট নিলেন। যার প্রথমটিই ধোনির। নিঃসন্দেহে চহলের বড় কৃতিত্ব। তবে পঞ্জাব স্পিনারের হ্যাটট্রিকের নেপথ্যে চেন্নাইয়ের লোয়ার অর্ডারের অবদানও থাকল। দীপক হুডা এবং নুর আহমেদ উইকেট উপহার দিয়ে গেলেন তাঁকে। টসের আগেই তো দলের মানসিকতা ঠিক করে দিয়েছিলেন মাহি। ২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ধোনির। দেশকে দু’টি বিশ্বকাপ, এক বার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়েছেন প্রাক্তন অধিনায়ক। এক নম্বর করেছেন টেস্ট ক্রিকেটেও। সাফল্য যেমন পেয়েছেন, তেমন কখনও কখনও ব্যর্থতার স্বাদও চাখতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু এতটা নেতিবাচক ধোনিকে কখনও দেখা যায়নি। এই ধোনি ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে বড্ড অচেনা। তাঁর দলের মতোই দিশাহারা। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং কিছুই ঠিক মতো হচ্ছে না। রবীন্দ্র জাডেজার মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও ধোনিকে সাহায্য করতে পারছেন না। ছক্কা বাঁচানো ডেওয়াল্ড ব্রেভিসের দুরন্ত ক্যাচেও ভাগ্য খুলল না চেন্নাইয়ের।